সিরিয়ায় ত্রাণ কর্মীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ

যুদ্ধবিরতি চলাকালীন সময় আক্রান্তদের জরুরি চিকিৎসা ও সাহায্য পৌঁছে দেয়ার দ্বায়ীত্বে রয়েছে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংগঠনগুলো। কিন্তু,মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে সিরিয়ায় ত্রাণ দেয়ার সময় স্থানীয় লোকেরা সেখানকার নারীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে যৌন কাজে ব্যবহার করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ত্রাণকর্মীরা স্বীকার করেছেন, খাদ্য সাহায্য এবং তাদের গাড়িতে করে কোথাও পৌঁছে দেয়ার বিনিময়ে তারা যৌন সুবিধা নিত। যৌন শোষণ সেখানে এতটাই ব্যাপক যে কিছু সিরিয় নারী ভয় ও লজ্জায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রেই যেতেন না। কারণ লোকে ভাববে যে তারা দেহবিক্রি করে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে এসেছে। বিবিসির বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

কেয়ার এবং আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি (আইআরসি) নামে দুটি ক্রাণ সংস্থা ২০১৫ সালেই সতর্ক করে দিয়েছিল, ত্রাণ বণ্টনের সময়ে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে। কিন্তু গত বছরেও ইউএনএফপিএর এক রিপোর্টে দেখা যায়, দক্ষিণ সিরিয়ায় ‘ত্রাণের বিনিময়ে যৌন সুবিধা নেয়া’ অব্যাহত রয়েছে। দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা হয়েছে, এক বেলার খাবার পেতে সিরীয় নারী বা অল্পবয়স্ক মেয়েরাও অল্প কিছু সময়ের জন্য কর্মকর্তাদের বিয়ে করে ‘যৌন সেবা’ দিয়েছে। কোথাও ত্রাণ বিতরণকারীরা মেয়েদের কাছে তাদের ফোন নাম্বার চেয়েছে, কেউ বা গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার বিনিময়ে ‘যৌন সুবিধা’ চেয়েছে।

অনেক নারীকে ত্রাণ দেয়ার বিনিময়ে ‘তার বাড়িতে যাওয়ার’ বা ‘তার সঙ্গে এক রাত কাটানোর’ ঘটনা ঘটেছে। একজন ত্রাণকর্মী দাবি করেছেন, লোকজনের হাতে ত্রাণ পৌঁছানোর স্বার্থে তারা এসব দেখেও না দেখার ভান করেছিলেন। ইউএনএফপিএর ‘ভয়েসেস ফ্রম সিরিয়া ২০১৮’ নামে এক রিপোর্টে বলা হয়, বিশেষ করে বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা নারী বা অল্পবয়েসী মেয়ে ‘যাদের কোনো পুরুষ রক্ষক নেই’, তাদের এরকম বিপদের ঝুঁকি বেশি।

দাতব্য সংস্থার উপদেষ্টা ডানিয়েল স্পেন্সার বলেন, কোনো কোনো নারী বলেছে, দারা এবং কুনেত্রার স্থানীয় কাউন্সিলের পুরুষকর্মীরা ত্রাণসামগ্রী আটকে রেখে নারীদের যৌন কাজে ব্যবহার করত। এ ব্যাপারে বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় জাতিসংঘ এবং দাতব্য সংস্থাগুলো এরকম ঝুঁকির কথা স্বীকার করেছে।

তবে তারা বলছে, এ ব্যাপারে তাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে এবং ওই অঞ্চলে তাদের সহযোগীদের মধ্যে এ ধরনের কাজ হচ্ছে বলে তাদের জানা নেই।