এবার বেঁচে ফেরা এক নারী শোনালেন সেই ভয়ঙ্কর সময়ের কথা!

‘দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা ছেড়ে আসি আমরা। বেলা আড়াইটার দিকে কাঠমান্ডু পৌঁছে পাইলট প্রথমে ল্যান্ড করার চেষ্টা করলে ব্যর্থ হন। পরে ঘুরে এসে আবারও যখন দ্বিতীয়বার ল্যান্ড করার চেষ্টা করেন, বিমানের বাঁ দিক উঁচু হয়ে ওঠে। আমি বলছিলাম, বাঁ দিকটা উঁচু হয়ে গেল কেন? তখনই ক্রাশ হয়ে যায়।’ কাঠমান্ডুর মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালের বেডে শুয়ে শাহরীন আহমেদ যখন কথাগুলো বলছিলেন, চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল।

বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলার যে উড়োজাহাজটি নেপালের কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত হয়েছে তার যাত্রী ছিলেন শাহরীন। ২৯ বছর বয়সী শাহরীন ঢাকার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। প্রথমবারের মতো নেপাল যাচ্ছিলেন বেড়াতে।

শাহরীন বলছিলেন, দুর্ঘটনার পর সবাই চিৎকার করছিল। আর আল্লাহর দরবারে দোয়া পড়ছিল। বিমনটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর তার সিটটি নিরাপদ জায়গাতেই ছিল। কিন্তু তাতেও কি আর স্বাভাবিক থাকা যায়! একে তো চারপাশে মৃত্যুর মিছিল, তার উপর আগুন ছড়িয়ে পড়ছিল বিমানে। অল্প সময়ের মধ্যে কারো সাহায্য না পেলে তাকেও আগুনে পুড়ে মরতে হবে ভাবছিলেন শাহরীন।

তিনি বলেন, ‘আগুন লাগার পর প্রায় বিশ মিনিট পর সাহায্য আসে। সে পর্যন্ত আমি আর আরেকজন বিমানের ভেতরই বসে ছিলাম। প্রচণ্ড ভয় লাগছিল আর হেল্প হেল্প বলে চিৎকার করছিলাম। কারণ আমি জানতাম, আগুন লাগার পর অনেকে দমবন্ধ হয়েই মারা যায়।’

উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধার করে কাঠমান্ডুর মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন তাকে। শাহরীনের শরীরের অনেক জায়গা আগুনে পুড়ে গেছে। তবে শঙ্কামুক্ত তিনি। গতকাল ওই বিমান দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিমানটিতে ৬৭ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু ছিলেন।