দেশের জন্য বাসর না করেই যুদ্ধে গিয়ে শহীদ হলেন যে বীর সেনা!

সিরিয়ার আফরিনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় কুর্দি যোদ্ধা ওয়াইজিপির ৩০ হাজার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা ফাঁস হয় ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কয়েকটি গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হবার পরপই তুরস্কের এরদোগান সরকার নড়েচড়ে বসে। তুরস্ক দীর্ঘ দিন ওয়াইজিপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে। ওই খবরের পর অঙ্কুরেই তাদের নির্মূল করতে অভিযান শুরু করে তুরস্ক।

গত শনিবার সিরিয়ার আফরিনে নিহত ৮ তুর্কি সেনাকে শুক্রবার দাফন করা হয়েছে। এর মধ্যে এক সেনা ছিলেন সদ্য বিবাহিত। আফরিন অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হলে তিনি তার বাসর ও বৌভাত অনুষ্ঠান স্থগিত করে যুদ্ধে অংশ নেন। প্রায় দুই মাস আফরিনে যুদ্ধে বৃহস্পতিবার তিনি শহীদ হন।

অভিযানে এ পর্যন্ত তুরস্কের ৪১ সেনা নিহত হয়েছে। অপর পক্ষে ওয়াইজিপির শতাধিক যোদ্ধা নিহত হয়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ওয়াইজিপির হামলায় তুরস্কের ৮ সেনা নিহত হয়। শুক্রবার সেনাদের জানাজায় হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। নিহতদের শহীদ আখ্যায়িত করে শুক্রবার জুমা নামাজের পর তাদের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

খবরে আফরিনে যুদ্ধ করতে যাওয়ার আগে সেনাদের শেষ বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। নিহত মোহাম্মদ দিনেক নামে এক সেনার মা জানান, তার সন্তান আফরিনে যাওয়ার আগে বলেছিল ‘এলাকাটি খুব কুয়াশাচ্ছন্ন। আমাকে দোয়া করবেন। আমরা ওখানে (আফরিনে) যাচ্ছি শহীদ হওয়ার জন্য’। এ সময় মা তার ছেলের কফিন জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।

নিহত ২৪ বছর বয়সী আরেক সেনা হলেন বুরহান আকিকল। তার আত্মীয়রা জানান, আফরিনে যাওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন, আমি যাচ্ছি (আফরিনে) শহীদ হতে’।

নিহত সেনা কর্মকর্তা আরিফ ডেমিরেল। তার মৃতদেহ যখন বিমান থেকে নামানো হয় তখন তার বোন মৃত ভাইয়ের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাকে স্বাগতম, হে আমার শহীদ ভাই’।

গত ২০ জানুয়ারি সিরিয়ার আফরিন অঞ্চলে পিপলস প্রটেকটিভ ইউনিটের (ওয়াইপিজি) বিরুদ্ধে আন্তঃসীমান্ত অভিযান শুরুর পর থেকে আঙ্কারার জন্য বৃহস্পতিবার ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ দিন। তুরস্কের সামরিক বাহিনীর দুটি পৃথক বিবৃতিতে হতাহতের এ সংখ্যা জানানো হয়।