নেপালে যাওয়ার আগে স্ত্রীর দেনমোহর পরিশোধ করেন নিহত মাহমুদ!

মৃত্যুর খবর নাকি অনেকে আঁচ করতে পারেন। বুঝতে পারেন তিনি চলে যাবেন। তেমনি ঘটেছিল মোটরসাইকেল কোম্পানি রানার গ্রুপের সিনিয়র কর্মকর্তা এসএম মাহমুদুর রহমানের বেলায়। নেপালে দুর্ঘটনায় শিকার ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে চড়তে গিয়ে বিমানবন্দরে গিয়ে মাহমুদ দেখেন পাসপোর্ট ছেড়ে এসেছেন। তাৎক্ষণিক স্ত্রী ঝর্ণা আক্তারকে পাসপোর্টটি বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফোন করেন। পরে পাসপোর্টটি ঝর্ণা আক্তার গিয়ে বিমানবন্দরে দিয়ে আসেন। স্ত্রী তখনো জানতেন না অন্তহীন যাত্রার পথে পাড়ি দিচ্ছেন স্বামী। আর মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় স্বামীর।

গত ১২ মার্চ নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন মাহমুদুর রহমান। আশ্চর্যের বিষয়, নেপালে যাওয়ার আগে তিনি স্ত্রীর মোহরানা পরিশোধ করেন। সেই সঙ্গে নিজের গাড়ির চালকের কাছে দিয়ে গিয়েছিলেন বাসা ভাড়ার টাকা। বিমানে উঠে শারীরিকভাবে খারাপ লাগার বিষয়টি প্রথম জানান স্ত্রীকে। নয় বছর প্রেম করে ২০১১ সালে বিয়ে করেন মাহমুদ। স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকার ১৯ নম্বর রোডের ৪৪ নম্বর বাসায়। পরিবারের অন্য সদস্যরা থাকতেন ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া গ্রামে।

গতকাল বিকালে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে লাশ নিতে এসেছিলেন মাহমুদুর রহমানের স্বজনরা। এসেছিলেন তার সত্তরোর্ধ্ব বাবা, মা, ভাই বোন, বোন জামাই, ভায়রা ভাই ও খালাতো বোন। তবে স্টেডিয়ামে দেখা যায়নি মাহমুদুর রহমানের স্ত্রীকে। বিকালে মাহমুদুর রহমানের লাশ নিয়ে স্বজনরা গাজীপুরের রানার কোম্পানির উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখানে তার নামাজে জানাজা শেষে লাশ গ্রামে করবস্থ করা হবে। কথা হয় তার ভায়রা মোহাম্মদ দুলুর সঙ্গে। তিনি বলেন, রিমন (মাহমুদুর রহমানের ডাক নাম) বুঝি মৃত্যুর বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলেন। এ কারণেই তিনি নেপাল যাওয়ার আগে স্ত্রীর মোহরানা পরিশোধ করেছিলেন।