হোটেলে রাত কাটানো সেই দম্পত্তি আবারো অশান্তিতে

ফের সম্পর্ক টানাপোড়েন শুরু বীরভূমের সিউরির দম্পতি গৌতম ও অহনার মধ্যে। বিচারকের হস্তক্ষেপের পরে সম্পর্ক নতুনভাবে শুরুর মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই ফের অশান্তির ছায়া নেমে এল এই দম্পতির মধ্যে।

গত জানুয়ারি মাসে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সিউড়ি আদালতের দ্বারস্থ হন অহনা সাহা। পালটা অভিযোগ তোলেন স্বামী গৌতম দাসও। কিন্তু সিউড়ির জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথী সেন নজিরবিহীনভাবে অহনা ও গৌতমকে তিনদিন একটি হোটেলে কাটানোর নির্দেশ দেন। নিজের খরচেই দম্পতিকে হোটেলে পাঠান বিচারক। সেই হোটেলে ওই দম্পতির আত্মীয়দেরও প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।

তিনদিন পরে বিচারকের সামনে পুরনো অভিমান ভুলে ফের শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার কথা জানান অহনা। গৌতম-অহনা দুজনে সিউড়ির ভট্টাচার্যপাড়ার বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ি ফিরলেও গৌতম ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ থানা থেকে প্রত্যাহার করেননি অহনা। তা ঘিরেই ফের বিতর্কের সূত্রপাত।

শ্বশুরবাড়িতে নিয়মিত তাঁকে গঞ্জনা শুনতে হয় বলে বিচারককে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেন অহনা। অহনার অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির দোতলায় যে ঘরে তাঁর বাবার দেওয়া যৌতুকের খাট-বিছানা রয়েছে, তা ব্যবহার করা বন্ধ করে দেন শ্বশুর। থানা থেকে অভিযোগ প্রত্যাহার না করায় ঘরের জিনিসপত্র ব্যবহার করতে হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন অহনা।

উল্লেখ্য, আদালতের নির্দেশে ১৯ জানুয়ারি শ্বশুরবাড়ি ফিরলেও ফের ১ ফেব্রুয়ারি বাবা মায়ের সঙ্গে নদিয়া ফিরে যান অহনা। কারণ হিসাবে অহনা জানান, খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরে গত ৩০ জানুয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরের দিন সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে, তার পরেই বাবার বাড়ি ফিরে যান। অহনার অভিযোগ, তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হয়, যদিও চিঠির শেষে শাশুড়িকে ‘ভাল মানুষ’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি, জেলা জজের কাছে ফের সুস্থ ও সাধারন জীবনযাপনের জন্য আর্জি জানান তিনি।

অহনার অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার দু’জনকেই জেলা আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয় জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্র। গৌতম দাস হাজিরা দিয়ে যান। অহনা অনুপস্থিত ছিলেন। তবে গৌতম তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অহনার আইনজীবী জানান, অহনা অসুস্থ থাকায় নদিয়া থেকে এসে আদালতে হাজির হতে পারেননি। ফলে দু’জন হাজির না হওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।

বিচার প্রক্রিয়ায় শুরু হলে ফের বিচারক সম্পর্কে জোড়া লাগাতে কোনও পদক্ষেপ করেন কি না, সেটাই এখন দেখার।