ঢাকা , মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পূর্ণ সামরিক প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান! তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণ, ভিডিওধারণ করে হুমকি দিতেন নোবেল ভারতের উজান থেকে নেমে আসছে পানি, ডুবে যেতে পারে দেশের ৪ জেলা সচিবালয়ে থাকা ‘আ.লীগের দোসর’ আমলা-কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করছে জুলাই ঐক্য উপদেষ্টা আসিফের কথাবার্তায় ভারসাম্যহীনতা রয়েছে: রিজভী বড় ভাইয়ের জন্মদিনে বেলুন নিয়ে খেলতে গিয়ে প্রাণ গেল ছোট বোনের হাসিনা হয়ে উঠতে চেয়েছিলেন নুসরাত ফারিয়া: চাঞ্চল্যকর তথ্য পিনাকী জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েও প্রতিহিংসার শিকার ইশরাক: দুদু নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র দেখছে বিএনপি গণঅভ্যুত্থানে গুলির নির্দেশদাতা মাজিস্ট্রেটদের তালিকা প্রকাশ জুলাই ঐক্যের

মেঘনায় অনুমোদনহীন ক্লিনিকে জীবাণুযুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অভিযোগ, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১০:১৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
  • ১৪২ বার পড়া হয়েছে

 

শামীম রায়হান,দাউদকান্দি প্রতিনিধি॥

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় অনুমোদনহীন ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পরিচালিত ডেন্টাল ক্লিনিকগুলোতে দাঁতের চিকিৎসার নামে চলছে চরম অনিয়ম ও অপচিকিৎসা। এর ফলে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

উপজেলার মানিকারচর বাজারসহ আশপাশের এলাকায় একাধিক অবৈধ ডেন্টাল কেয়ার গড়ে উঠেছে। এসব চেম্বারের অধিকাংশই চালাচ্ছেন ডিপ্লোমাধারী বা স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি, যাঁরা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) কর্তৃক অনুমোদিত নন। ফলে তাঁদের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যতীত বড় চিকিৎসা দেওয়া আইনগতভাবে নিষিদ্ধ।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দাঁতের চিকিৎসা কোনো সাধারণ সেবা নয়। এখানে ইনজেকশন, রক্তপাত ও ধারালো যন্ত্র ব্যবহারের কারণে রোগজীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। অথচ অনুমোদনহীন ক্লিনিকগুলোর বেশিরভাগই জীবাণুমুক্ত যন্ত্রপাতি ছাড়াই রোগীর মুখগহ্বরে চিকিৎসা দিচ্ছে। একই ইনজেকশন বা সরঞ্জাম একাধিক রোগীর ব্যবহারের ফলে ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়মা রহমান জানান, “সম্প্রতি মেঘনা উপজেলায় হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। অধিকাংশ রোগী প্রথমে স্থানীয়ভাবে অপচিকিৎসার শিকার হন এবং সুস্থ না হয়ে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তখনই আমরা বিষয়টি শনাক্ত করতে পারি। আমাদের এখানে বিডিএস ডিগ্রিধারী রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দ্বারা পরিচালিত ডেন্টাল ইউনিট রয়েছে, যেখানে এসব রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। আমরা নিয়মিতভাবে বাজারগুলোতে নজরদারি করছি এবং জনগণ ও সংশ্লিষ্টদের সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে শুধু সচেতনতা নয়, অবৈধভাবে পরিচালিত ক্লিনিক ও অপচিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২৬৯ ও ২৭০ ধারায় জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বা সংক্রমণ ছড়াতে পারে এমন কর্মকাণ্ড শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একইভাবে বিএমডিসি আইন অনুযায়ী, রেজিস্ট্রেশনবিহীন ব্যক্তি চিকিৎসাসেবা দিলে তা বেআইনি হিসেবে গণ্য হয়। ফলে অবৈধভাবে পরিচালিত ডেন্টাল ক্লিনিক বা অপচিকিৎসায় রোগ সংক্রমণ ঘটালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।

স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, অনুমোদনবিহীন চেম্বারগুলোর তালিকা তৈরির কাজ চলমান রয়েছে এবং এগুলো চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াও চলছে। শিগগিরই এসব চেম্বারের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিব ও জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল। তাঁদের দাবি, দাঁতের চেয়ারে যেন কোনো রোগীর মৃত্যু ফাঁদে পরিণত না হয়, সেজন্য অবিলম্বে এসব অপচিকিৎসা বন্ধ করা দরকার।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পূর্ণ সামরিক প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান!

মেঘনায় অনুমোদনহীন ক্লিনিকে জীবাণুযুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অভিযোগ, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা

আপডেট সময় ১০:১৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

 

শামীম রায়হান,দাউদকান্দি প্রতিনিধি॥

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় অনুমোদনহীন ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পরিচালিত ডেন্টাল ক্লিনিকগুলোতে দাঁতের চিকিৎসার নামে চলছে চরম অনিয়ম ও অপচিকিৎসা। এর ফলে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

উপজেলার মানিকারচর বাজারসহ আশপাশের এলাকায় একাধিক অবৈধ ডেন্টাল কেয়ার গড়ে উঠেছে। এসব চেম্বারের অধিকাংশই চালাচ্ছেন ডিপ্লোমাধারী বা স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি, যাঁরা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) কর্তৃক অনুমোদিত নন। ফলে তাঁদের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যতীত বড় চিকিৎসা দেওয়া আইনগতভাবে নিষিদ্ধ।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দাঁতের চিকিৎসা কোনো সাধারণ সেবা নয়। এখানে ইনজেকশন, রক্তপাত ও ধারালো যন্ত্র ব্যবহারের কারণে রোগজীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। অথচ অনুমোদনহীন ক্লিনিকগুলোর বেশিরভাগই জীবাণুমুক্ত যন্ত্রপাতি ছাড়াই রোগীর মুখগহ্বরে চিকিৎসা দিচ্ছে। একই ইনজেকশন বা সরঞ্জাম একাধিক রোগীর ব্যবহারের ফলে ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়মা রহমান জানান, “সম্প্রতি মেঘনা উপজেলায় হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। অধিকাংশ রোগী প্রথমে স্থানীয়ভাবে অপচিকিৎসার শিকার হন এবং সুস্থ না হয়ে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তখনই আমরা বিষয়টি শনাক্ত করতে পারি। আমাদের এখানে বিডিএস ডিগ্রিধারী রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দ্বারা পরিচালিত ডেন্টাল ইউনিট রয়েছে, যেখানে এসব রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। আমরা নিয়মিতভাবে বাজারগুলোতে নজরদারি করছি এবং জনগণ ও সংশ্লিষ্টদের সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে শুধু সচেতনতা নয়, অবৈধভাবে পরিচালিত ক্লিনিক ও অপচিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২৬৯ ও ২৭০ ধারায় জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বা সংক্রমণ ছড়াতে পারে এমন কর্মকাণ্ড শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একইভাবে বিএমডিসি আইন অনুযায়ী, রেজিস্ট্রেশনবিহীন ব্যক্তি চিকিৎসাসেবা দিলে তা বেআইনি হিসেবে গণ্য হয়। ফলে অবৈধভাবে পরিচালিত ডেন্টাল ক্লিনিক বা অপচিকিৎসায় রোগ সংক্রমণ ঘটালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।

স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, অনুমোদনবিহীন চেম্বারগুলোর তালিকা তৈরির কাজ চলমান রয়েছে এবং এগুলো চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াও চলছে। শিগগিরই এসব চেম্বারের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিব ও জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল। তাঁদের দাবি, দাঁতের চেয়ারে যেন কোনো রোগীর মৃত্যু ফাঁদে পরিণত না হয়, সেজন্য অবিলম্বে এসব অপচিকিৎসা বন্ধ করা দরকার।