গুম কমিশনের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ভয়ভীতি, হুমকি এবং নজরদারির মতো চাপের মুখে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন— এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রতিবেদনে। সরাসরি, ফোনকল বা অনলাইন মাধ্যমে সদস্যদের ভয় দেখানো হয়েছে, করা হয়েছে অপপ্রচার, কুৎসা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অপচেষ্টা।
গত বুধবার (৪ জুন) গুম কমিশনের সদস্যরা তাদের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেন। এরপর শুক্রবার (৬ জুন) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এই প্রতিবেদনের একটি অংশ প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “কমিশনের সদস্যদের বিরুদ্ধে এমন অপবাদ ছড়ানো হয়েছে যে, তারা বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার (যেমন: আইএসআই, র, সিআইএ) এজেন্ট কিংবা ধর্মীয় বা রাজনৈতিক উগ্রপন্থি। কিছু সাক্ষাৎকারে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা খোলাখুলিভাবেই জানিয়েছেন, তারা কমিশন সদস্যদের পরিবার পর্যন্ত নজরদারির আওতায় রেখেছেন।”
তবে ভয়ভীতি ও অপপ্রচারের এসব অপচেষ্টা কমিশনের কাজকে থামিয়ে দিতে পারেনি। বরং সদস্যরা এগুলোকে ‘গুরুত্বহীন উসকানি’ হিসেবে বিবেচনা করে তাদের দায়িত্ববোধ ও নির্যাতিতদের প্রতি প্রতিশ্রুতির জায়গা থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রক্রিয়াগত প্রতিবন্ধকতার চিত্রও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
একটি গোপন আটককেন্দ্র পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলা হয়—
“সেখানে ছবি ও প্রমাণ সংগ্রহের পর সংশ্লিষ্ট সংস্থা লিখিতভাবে কেন্দ্রটির অস্তিত্ব অস্বীকার করে। পরে সরাসরি যোগাযোগ এবং অকাট্য প্রমাণ উপস্থাপনের পর তারা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসে এবং সাইটটির অস্তিত্ব স্বীকার করে।”
কমিশনের সবচেয়ে ধারাবাহিক প্রতিবন্ধকতার একটি হলো সরকারি দপ্তরগুলো থেকে তথ্যপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিলম্ব বা গড়িমসি।
“অনেক প্রতিষ্ঠান সংবেদনশীল তথ্য লিখিতভাবে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এমনকি একটি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর পেতেও আমাদের সপ্তাহ বা মাস লেগেছে”— প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।