পুলিশ থেকে আদালত সবাইকে ঘোল খাওয়ালো কিশোর

বাবার সন্মান রক্ষার্থে সন্তান অনেক রাস্তাই নেয়। কিন্তু দিল্লির বাসিন্দা এক কিশোর যে রাস্তা নিয়েছে, তাতে অবাক শীর্ষ আদালতের বিচারপতি থেকে শুরু করে দেশের রাজধানীর বড় বড় পুলিশকর্তারা।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিল্লির বাসিন্দা এক সহকারী অধ্যাপক কলেজের প্রিন্সিপাল ও পরিচালন কমিটির বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলাটি রদ করে দেয়।
এর পর ওই ব্যক্তি ক্রমশ হতাশায় ভুগছিলেন। কিন্তু অধ্যাপক-বাবার সন্মান রক্ষায় তাঁর ছেলে এমন কাণ্ড করে বসবে তা ভাবতেও পারেনি কেউ।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির ১৪ বছরের ছেলে সুপ্রিম কোর্টের নকল একটি ওয়েবসাইট বানায়। সেই ওয়েবসাইটে নকল একটি অর্ডারের প্রতিলিপি সে তৈরি করে। সুপ্রিম কোর্টে রায় তার বাবার পক্ষেই গিয়েছে এমন ভাবেই তৈরি হয় প্রতিলিপিটি। সেই প্রতিলিপি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয় ওই কিশোর। পাশাপাশি নিজের পরিচিতদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেয় সেই প্রতিলিপি।

সেই প্রতিলিপি নিয়ে প্রথমে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যান ওই কিশোর ও তার বাবা। কিন্তু তাতে কোনও কাজ না হওয়ায় দিল্লি হাইকোর্টে যান তাঁরা। জানা গিয়েছে, ছেলেটি সুপ্রিম কোর্টের নকল একটি স্ট্যাম্প জোগাড় করে ওই প্রতিলিপিতে লাগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিলিপি দেখেই হাইকোর্টের বিচারপতির সন্দেহ হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করতেই আসল সত্য বেরিয়ে আসে।
ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাবালক হওয়ায় ছেলেটি জামিন পেয়ে যায়। কিন্তু বাড়ি ফিরেই সে আবার বাবাকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার ফন্দি আঁটে সে।
জানা গিয়েছে, বাবাকে ছাড়ানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতির নামে ফের নকল অর্ডার তৈরি করে সে। সেই অর্ডারের প্রতিলিপি নিম্ন আদালতের বিচারকদের কাছেও পাঠিয়ে দেয়। পাশাপাশি মামলার তদন্তকারী অফিসারের একটি ফেক ই-মেল আইডি তৈরি করে। সেই ই-মেল থেকে তাঁর বাবা যে কলেজে পড়াতেন, সেই কলেজের প্রিন্সিপালের কাছেও মেল করে সে। তবে ওই কিশোর পুলিশের হাতে ফের ধরা পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে যে, ওই কিশোরকে কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আপাতত ওই কিশোরের কাউন্সেলিং করা হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে যে ভাবে ওই কিশোর আদালত থেকে পুলিশ সবাইকে ঘোল খাইয়ে দিয়েছে, তা ভেবেই অবাক হয়ে যাচ্ছেন পুলিশের বড়কর্তারা।