শ্রীদেবীর রহস্যজনক মৃত্যু! যেসব প্রশ্ন দেখা দিয়েছে

বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীদেবীর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মাত্র ৫৪ বছর বয়সে অকালমৃত্যু হয়েছে, প্রাথমিকভাবে এ খবর জানা গেলেও, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের পর মৃত্যু ঘিরে রহস্য বাড়ছে ।

রবিবার বাংলাদেশি সময় দুপুর দুইটা নাগাদ শ্রীদেবীর ময়নাতদন্ত হয়েছে দুবাইতে। তদন্তের কারণ ‘হার্ট অ্যাটাক’ হলেও অভিনেত্রীর রক্ত এবং অঙ্গ পরীক্ষা করে দেখবে দুবাইয়ের ফরেন্সিক বিভাগ। বিষক্রিয়ায় এই মৃত্যু কিনা, তা এই পরীক্ষা থেকে বোঝা যাবে।

দুবাইয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ছোট মেয়ে খুশি ও বনি কাপুরকে নিয়ে শ্রীদেবী গিয়েছিলেন দুবাইয়ে। সেখানে জুমেইরাহ এমিরেটস টাওয়ার হোটেলে ছিলেন তারা।
বিয়েবাড়ি শেষ হয়ে যাওয়ার পর ২১ ফেব্রুয়ারি মুম্বাই ফিরে আসেন শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুর ও তার ছোট মেয়ে খুশি। এরপর টানা দু’দিন হোটেলের ঘর থেকে বেরোননি এই অভিনেত্রী ।

শনিবার সন্ধ্যায় স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দিতে আবার দুবাই যান বনি । বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ হোটেলে পৌঁছে স্ত্রীকে ঘুম থেকে তোলেন। ১৫ মিনিট দুজনের মধ্যে কথা হয় । এরপর রাত্রের খাবার খাওয়ার জন্য বনি স্ত্রীকে অনুরোধ করলে ফ্রেশ হবার জন্য বাথরুমে ঢোকেন শ্রীদেবী । কিন্তু, অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি বেরোচ্ছেন না দেখে বনি বারবার দরজা ধাক্কা দেন, সাড়া না পেয়ে বাথরুমের দরজা ভেঙে অজ্ঞান অবস্থায় স্ত্রীকে বাথটাব থেকে তুলে আনেন ।

এরপর বনি তার এক বন্ধুকে ফোন করে ডাকেন । শ্রীদেবীকে নিয়ে যাওয়া হয় রশিদ হাসপাতালে । সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে শ্রীদেবীর। রাত্রি ৯টা নাগাদ পুলিশ ডাকা হয় ।

দুবাইয়ের সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের দাবি, ময়নাতদন্তে শ্রীদেবীর রক্তে অ্যালকোহল পাওয়া গেছে । এরপর থেকেই এই মৃত্যুকে ঘিরে নানান প্রশ্ন উঠে আসতে শুরু করে । ভারতের সমাজবাদী পার্টির নেতা অমর সিং দাবি করেছেন শ্রীদেবী মদ্যপান করতেন না। অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে ওয়াইন খেতেন। তার এই দাবিতে রহস্য আরও বেড়েছে। তাহলে কি অভিনেত্রীকে কেউ জোর করে মদ্যপান করিয়েছিলেন?

প্রশ্ন উঠছে, স্বামী-মেয়ে ফিরে আসার পরও দুদিন দুবাইয়ের হোটেলে কেন ছিলেন এই অভিনেত্রী? হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মৃত্যু হয় শ্রীদেবীর। কিন্তু পুলিশে খবর দেওয়া হয় রাত নয়টায়। এত পরে কেন মৃত্যুর খবর পুলিশকে জানাল? তদন্ত এবং জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে দুবাই পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বনি কাপুরকে।

ঘটনাস্থল এবং তার আশেপাশের সবকিছু খতিয়ে দেখছে পুলিশ । হোটেলের ২২০১ নম্বর ঘর, যেখানে শ্রীদেবীর মৃত্যু হয়েছে সেই ঘরটির বাইরের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বয়ান নেওয়া হচ্ছে হোটেল কর্মচারীদেরও।

ইতিমধ্যে তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে দুবাইয়ের পাবলিক প্রসিকিউশনের উপর। শ্রীদেবীর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করেই মরদেহ তুলে দিতে চায় দুবাই প্রশাসন।