আজ সাকিবের জন্মদিন, শুভ জন্মদিন সাকিব আল হাসান

সাকিব আল হাসান বাংলাদেশর প্রাণ। প্রবাদটি সবার কাছে খুবই প্রিয়। আর এ প্রবাদটি যে বার বার বার প্রমানিত হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে। বাংলাদেশ দলের ম্যাচে জয়ের প্রধান সারথী তিনি। বিশ্বের বহু নামীদামি ক্রিকেটার তার ঘূর্ণির জাদুতে কূপকাত হয়েছেন।

জ্যাক ক্যালিস, মোহাম্মদ হাফিজ, শহীদ আফ্রিদি, শেন ওয়াটসন, বেন স্টোকস ও রবিচন্দ্র অশ্বিন মত তারকাদের টপকে অলরাউন্ডারের রাজত্ব করে করে চলেন নিয়মিত। তিনি এমন একজন ক্রিকেটার যিনি প্রত্যেকটি ম্যাচই কম বেশী বোলিং না হয় ব্যাটিংয়ে অবদান রেখে বাংলাদেশ দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন।

আজ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ৩১তম জন্মদিন। ১৯৮৭ সালের ২৪ মার্চ মাগুরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এই তারকা ক্রিকেটার।

মাগুরার স্থানীয় একটি ক্লাবে ক্রিকেটের তার পথ চলা শুরু। বাবা মাশরুর রেজা ফুটবলের ভক্ত হলেও ছেলের হাতে তুলে দেন ব্যাট-বল। এরপর বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) সাকিবের ক্রিকেটের প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু।

শুরু থেকেই বল-ব্যাট দুটিতেই দারুণ আলো ছড়াতে থাকা সাকিব ২০০৬ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষিক্ত হয়ে মাঠে নামেন। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

একদিন আগেই গতকাল শুক্রবার ভক্তদের নিয়ে নিজের জন্মদিন পালন করলেন এই অলরাউন্ডার। মিরপুর এক নম্বরে সাকিব’স ৭৫ কনভেনশন হলে হয়েছে অনুষ্ঠানটি।

ভক্তদের নিয়ে জন্মদিন পালন করায় ভিশন খুশি তার ভক্তরা। শামীম আল হাসান নামে এক সমর্থক জানান, ‘আমাদের গ্রুপের নাম ফ্যান’স অব সাহ৭৫। এছাড়া আরও ৮-১০টি গ্রুপ এই অনুষ্ঠানে এসেছিল। প্রতি বছর আমরা তার জন্মদিন পালন করে থাকি। কিন্তু এবার সাকিব নিজে থেকেই আমাদের ডেকেছেন।’ অনুষ্ঠানটির স্পন্সর ছিল ডিজিটাল বিনোদন প্ল্যাটফর্ম ‘লিংকআস’।

জন্মদিনের প্রোগ্রামে সাকিব বলেন, নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে উঠে আমরা দেখিয়েছি এই ফরম্যাটেও পারে বাংলাদেশ। এখন এটা ধরে রাখতে হবে। টি ২০তে ভালো করতে হলে বিপিএলের পাশাপাশি আরও একটি ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হলে ভালো হয় বলে মনে করছেন সাকিব। তিনি বলেন, শুনেছিলাম বিপিএলের পাশাপাশি ঢাকা লিগের ছয়টি দল নিয়ে আরেকটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হবে। সেটা করতে পারলে এই ফরম্যাটে দলের জন্য ভালো হবে।

সাকিব ৬ আগস্ট ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে, ২৮ নভেম্বর ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে টি২০ ও ১৮ মে ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে অভিষিক্ত হন।

সাকিব ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে টেস্ট, ওডিআই ও টি২০ প্রত্যেক ক্রিকেট সংস্করণে এক নম্বর অল-রাউন্ডার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন| সাকিব প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ৪,০০০ করার গৌরব অর্জন করেন। তিনি টি২০তে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০০০ রান পূর্ণ করেন ৷ এছাড়া দ্বিতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে টি২০তে ১০০০ রান ও ৫০ উইকেট লাভ করেন ৷

এখন পর্যন্ত ৫১ টেস্টের ৯৬ ইনিংসে ব্যাট করে সাকিব ৪০.৩৮ গড়ে ৩৫৯৪ রান করেছেন।রয়েছে পাঁচটি সেঞ্চুরি ও ২২টি হাফসেঞ্চুরি। সাদা পোশাকে তার সর্বোচ্চ ইনিংস ২১৭। এটি আবার বাংলাদেশের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ। সমান টেস্টে ৮৬ ইনিংসে বল করে পেয়েছেন ১৮৮টি উইকেট। যেখানে বোলিং গড় ৩২.৩৭ ও ইকোনোমি ৩.০১। ১০ উইকেট পেয়েছেন দু’বার। আর ৫ উইকেট পেয়েছেন ১৭বার।এক ম্যাচে তার সেরা বোলিং ফিগার ১২৪ রানে ১০ উইকেট। আর এক ইনিংসে ৩৬ রানের বিনিময়ে ৭ উইকেট।

ওয়ানডেতে সাকিবের ক্যারিয়ার আরও সমৃদ্ধ। ১৮৫ ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন ১৭৪বার। যেখানে ৩৪.৯৫ গড়ে করেছেন ৫২৪৩ রান। রয়েছে ৭টি সেঞ্চুরি ও ৩৭টি হাফসেঞ্চুরি। এক ম্যাচে তার সেরা ১৩৪ (অপরাজিত)। আর ১৮২ ইনিংসে বল করে ২৯.৪৬ গড় ও ৪.৪৪ ইকোনোমিতে নিয়েছেন ২৩৫টি উইকেট। ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছেন একবার। সেরা বোলিং ফিগার ৪৭ রানে ৫ উইকেট।

৬৩টি টি-২০ খেলে ১২০.৬৮ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১২৩৭ রান। রয়েছে ৬টি হাফসেঞ্চুরি। আর ৬২ ইনিংসে বল ঘুরিয়ে নিয়েছেন ৭৫ উইকেট। ইকোনোমি ৬.৭৮। সেরা বোলিং ফিগার ১৫ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট।