আপনার শিশু যৌন নিগ্রহের শিকার! কিভাবে বুঝবেন?

কচি শরীরে যখন নখের আঁচড় বসে, চামড়ায় দাগ থেকেই যায়। সারা জীবনের একটা যন্ত্রণা মনের মধ্যে পেয়ে বসে। অসহায় শিশুমন তো বেশিরভাগ সময় জানতেই পারে না তার সঙ্গে কী হচ্ছে? ধর্ষণের মর্মার্থ বোঝার আগেই নিগ্রহের শিকার হয়ে যায় সে। সাম্প্রতিক অতীতে এমন উদাহরণ কম নেই। জি ডি বিড়লা থেকে কারমেল স্কুল– নামগুলো নিলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে পুলিশ, অভিভাবকদের বিক্ষোভ, যথাযথ ব্যবস্থার আশ্বাস। ব্যস! এখানেই কি সমস্ত দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়? আপনার শিশুকে বোঝার সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব কিন্তু আপনার। তার চেয়েও বড় দায়িত্ব তাকে বোঝার। তার সঙ্গে কী হচ্ছে না হচ্ছে, তা আন্দাজ করতে পারার। কীভাবে বুঝবেন আপনার শিশুর যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছে বা হচ্ছে? কিছু লক্ষণ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। আর কিছু আপনাকেই অনুভব করতে হবে।

অস্বাভাবিক আচরণ: রোজকার মতো ব্যবহার করছে না বাচ্চাটা। কেমন যেন খিটখিটে হয়ে গিয়েছে। কিছু বললেই বিরক্ত হচ্ছে। কিংবা খুবই দুষ্টুমি করছে। এদিকে রেজাল্ট খারাপ করছে। যেন ইচ্ছে করেই সমস্তটা করছে। না ইচ্ছে করে হয়তো আপনার শিশু এমনটা করছে না। নিশ্চয়ই তাঁর কোনও সমস্যা হচ্ছে। তাকে সময় দিন। কথা বলার মতো পরিস্থিতি তৈরি করুন।

ভয়: ছেলেটা কিংবা মেয়েটা ইদানীং কেমন যেন চুপ করে গিয়েছে। সারাক্ষণ সিঁটিয়ে থাকে। ছোট ছোট বিষয়ে ভয় পেয়ে যাচ্ছে। কিসের ভয় সে পাচ্ছে? তা জানাটা ভীষণ জরুরি। কোনওভাবে নিগ্রহের শিকার হচ্ছে না তো সে?

এড়িয়ে যাওয়া: কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে এড়িয়ে যাচ্ছে আপনার শিশু। আদর করে ডাকলেও ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। কিছুতেই ওই মানুষটার কাছে যেতে চাইছে না। সতর্ক হোন। আপনার শিশু কেন এমনটা করছে? প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করুন।

যৌনতায় আগ্রহ: হঠাৎ করে আপনার শিশু অশালীন ভাষা ব্যবহার করতে শুরু করেছে। টেলিভিশন কিংবা কমপিউটরে প্রাপ্তবয়স্ককের ছবি দেখার আগ্রহ বাড়ছে। হয়তো সে জানতে চাইছে তার সঙ্গে কী হয়েছে।

স্কুল: সাম্প্রতিক উদাহরণ থেকে বলা যায়, এখন স্কুলও কিন্তু শিশুদের পক্ষে সুরক্ষিত নয়। যদি দেখেন, আপনার শিশু স্কুলে যেতে চাইছে না। তাহলে সাবধান হোন। কারণটা জানার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও তার বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে কথা বলুন।

শারীরিক সমস্যা: অল্প বয়সে শারীরিক শোষণের শিকার হলে শিশুদের শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনার শিশু অসুস্থ হলে তাকে অবশ্য ভালভাবে ডাক্তার দেখাবেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।

ইশারা: কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিশুরা ইশারা দেওয়ার চেষ্টা করে। আপনার শিশুর ব্যবহারে কোনও আস্বাভাবিকত্ব দেখলে তা এড়িয়ে যাবেন না। তার ইশারা বুঝুন। তাকে বুঝুন। তাহলে সেও আপনাকে বোঝাতে পারবে তার সঙ্গে কী হয়েছে বা হচ্ছে। সময় থাকতেই সাবধান হোন।