উপ-সচিবের মেয়ে হয়েও চোর!

নাম জোবাইদা। বাবা ছিলেন উপ-সচিব, পোশাক আশাক কিংবা পরিচয়ে সবখানে তিনি সম্ভ্রান্ত ও অভিজাত। কিন্তু আসলে তিনি একজন চোর। ধনীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে চোখের পলকে লোকজনের ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড চুরি করে। তবে সম্প্রতি চুরি করতে গিয়ে তিনি ধরা পরার পর জানা যায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২০টিরও বেশি মামলা আছে।

ঢাকার অভিজাত পাড়ায় প্রায় প্রতিদিনই জাঁকমজকপূর্ণ আয়োজন হয়। এতে অংশ নেয় সমাজের উচ্চবিত্ত এবং গন্যমান্য ব্যক্তিরা। সেই ধরনরেই এক আয়োজনে সাবেক একজন বিচারপতির স্ত্রীর ক্রেডিট কার্ড চুরির পরেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েন জোবাইদা। বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

পুলিশ জানায়, স্বামীর হাত ধরে মাদকের পথে পা বাড়ান তিনি। বিবাহ বিচ্ছেদের পর মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অন্ধকারের এই পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।ধনীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সুযোগ বুঝে কৌশলে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড হাতিয়ে নেওয়ায় তার কাজ।

উত্তরা পশ্চিম থানার অনুসন্ধান জানায়, সম্প্রতি রাজধানীর কেএফসির একটি শাখা থেকে সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামস উদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রীর ক্রেডিট কার্ড চুরি করেন জোবাইদা। ওই ক্রেডিট কার্ড দিয়ে একটি শর্পিং সেন্টার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকার কেনাকাটা করেন তিনি।গত ২৬ জানুয়ারি উত্তরা জমজম টাওয়ারের একটি দোকানে বেশ কয়েকটি ক্রেডিট কার্ড নিয়ে কেনাকাট করতে গেলে ধরা পরে সিসি ক্যামেরায়। সেখানে দেখা যায় কার্ড কাজ করায় পর পর ৫টি কার্ড বের করেন এই নারী।

গত ১২ মার্চ গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে জোবাইদা জানান, এই পর্যন্ত অর্ধ-শতাধিক ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ড তিনি চুরি করেছেন।

তিনি বলেন, তারা যখন খাওয়া-দাওয়ায় ব্যস্ত থাকে তখন পার্স পড়ে থাকলে সেটা নিয়ে নেই। আর বড় লোকেরাতো খায় একদিকে, আর তাকিয়ে থাকে অন্যদিকে।

উত্তরা পশ্চিম থানার তদন্ত কর্মকর্তা শরিফ হোসেন বলেন, জোবাইদা ভিআইপি বিভিন্ন কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠানে গিয়ে বিভিন্ন কৌশলে ব্যাগটা নিয়ে আসে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী হোসেন খান বলেন, জোবাইদাতো আসলে প্রফেশনাল ক্রিমিনাল। তার প্রতিদিন ৬টা করে ইয়াবা লাগে। আর ইয়াবার টাকা জোগাড় করার জন্যই মূলত সে এই পেশায় নিয়োজিত হয়ে গেছে।

মাদকের নেশা গ্রাস করেছে জোবাইদার মতো আরও অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়েকে। এদিকে উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা একটি প্রতারণা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলায় জোবাইদা সুলতানার ঠিকানা এখন জেলখানা।

সূত্র: চ্যানেল ২৪