একটি ইনিংসের মাধ্যমেই হেটার্সদের মুখ বন্ধ করে দিলেন আশরাফুল

নিষিধাজ্ঞা থেকে ফিরে এসে আশরাফুল যেন আর সেই আগের আশরাফুল নেই। পরপর দুইতি ডিভিশন লীগ খেলছেন তিনি, কিন্তু নেই কোন সেঞ্চুরি! আর এই তার বিরোধীরাও শুরু করে দেয় আর বিরোধীতা। আর আশরাফুল তার একটি ইনিংসের মাধ্যমেই যেন সব বিরোধীতাকে চুপ করিয়ে দিলেন। আর তার সেই সেঞ্চুরি আসে শক্তিশালী প্রাইম দোলেশ্বরের বিরুদ্ধে।

তবে আশরাফুলের অমন সেঞ্চুরির পর অতিবড় তার বিরোধিও চুপ মেরে যান। সবার মনে হয়, নাহ্ এখনো ফুরিয়ে যাননি এ নন্দিত-নিন্দিত ক্রিকেটার। ব্যাটে আগের সেই তেজ আর বাহারি মারের তোড় না থাকলেও ব্যাকরণ মেনে বলের মেধা ও গুণ বিচার করে লম্বা ইনিংস খেলার সামর্থ্যটা আছে আগের মতই।

কিন্তু হায়! যখনি অমন ভাবতে শুরু করা, ঠিক তখনি আবার অতলে তলিয়ে যাওয়া। শতরানের পর একদম টানা ব্যর্থ আশরাফুল। গাজী গ্রুপ, শাইনপুকুর আর খেলাঘরের বিপক্ষে পর পর তিন খেলায় ব্যর্থতার ঘানি টানা। শেষ তিন ইনিংসে (৮+০+০) রান মোটে ৮।

শতরানের পর কোথায় উজ্জীবিত হবেন, ব্যাট কথা বলবে, রানের নহর বইবে, তা না উল্টো নিজেকে হারিয়ে ফেলা। প্রিয় ছাত্রের এমন করুণ পারফরমেন্স দেখে হতাশ কোচ জালাল আহমেদ চৌধুরী। কলাবাগান কর্তারা যারপরনাই ক্ষুব্ধ। এটা কোন পারফরমেন্স হলো? তিন ম্যাচে আট রান! ভাবা যায়! আর শেষ দুই ম্যাচে জোড়া শূন্য!

নাহ ঢের হয়েছে। আর নয়। এমন বাজে পারফরমেন্সের পর আশরাফুলকে আর খেলানো ঠিক হবে না। তাকে ড্রপ করা ছাড়া আর পথ নেই। এমন ভাবনা এসে ভড় করে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। আজ (রোববার) অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে খেলার আগেই সিদ্ধান্ত পাকা হয়ে যায়, এ ম্যাচ খেলানো হবে না আশরাফুলকে।

সেই মত আগের রাতে কোচ জালাল আহমেদ চৌধুরীর ফোন, ‘আশরাফুল শোন, পর পর তিন ম্যাচে রান নেই। তোর এখন একটু ব্রেক দরকার। তুই কাল না খেললি। আমরা তোকে ড্রপ দেয়ার কথা ভাবছি। একটি ম্যাচ বাইরে থাক।’

কোচের এমন ফোনে যেন সম্বিৎ ফিরে পাওয়া। তবে কি আমার এবারের লিগ শেষ? আমি কি শেষ পর্যন্ত একাদশের বাইরে চলে যাচ্ছি? এই ভেবে ভেবে আধো ঘুম আধো জাগা অবস্থায় রাত পার করা। সকালে খেলা শুরুর আগে বিকেএসপি মাঠে গিয়ে কর্মকর্তাদের কাছে অনুনয় বিননয়! ‘ভাই প্লিজ আমাকে ড্রপ দিয়েন না। আর একটি ম্যাচ সুযোগ দেয়া যায় না? আমাকে কাইন্ডলি আজকের ম্যাচটি খেলতে দিন। আজ ব্যর্থ হলেই ড্রপ করে দিয়েন। প্লিজ আজ খেলতে দিন। শুধু এই ম্যাচটি খেলতে চাই। এদিন রান করতে না পারলে আর খেলানোর অনুরোধ করবো না।’

এমন বলে কয়ে মাঠে নামা। আর খেলতে নেমেই বাজিমাৎ। আর এর মাধ্যমে আশরাফুল আরো একবার প্রমানিত করলেন হার না মানার পাত্র তিনি।