কন্যা সন্তান হওয়ায় স্ত্রীকে খুন

গায়ের রং কালো, এই অজুহাতে নাবালিকা বধূকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিল শ্বশুড়বাড়ি। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধ’-এ এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কাটোয়ার বরমপুর গ্রামে। পুলিশ জানায় মৃতার নাম পূজা পণ্ডিত (২৩)। বুধবার খুব সকালে তাঁর দেহ কাটোয়া হাসপাতালে ফেলে রেখে পালায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রতিবেশীদের কাছে খবর পেয়ে মৃতার বাপেরবাড়ির লোকজন হাসপাতালে পৌঁছান। তাঁদের অভিযোগ, পূজাকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে। পুলিশ ওই ঘটনায় মৃতার শ্বশুর কৃষ্ণ পণ্ডিতকে আটক করেছে। বাকিরা পলাতক।

কাটোয়ার টিকরখাঁজি গ্রামের বাসিন্দা সুবোধ পণ্ডিতের মেয়ে পূজার তিনবছর আগে বিয়ে হয়েছিল বরমপুর গ্রামের বাসিন্দা মঙ্গল পণ্ডিতের সঙ্গে। সুবোধবাবু জানিয়েছেন, দেখাশোনা করেই এবং বরপণ দিয়ে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন পূজা। তারপর থেকেই অশান্তি শুরু হয়। জানা গিয়েছে, পূজার স্বামী মঙ্গল পণ্ডিত ভিনরাজ্যে একটি দোকানে কাজ করেন। সুবোধবাবু বলেন, “আমার মেয়ে সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় আমার কাছেই এসেছিল। কন্যাসন্তান হওয়ার খবর শুনে তারা আর মেয়েকে নিতে আসেনি। প্রায় ১০ মাস পর আমরা পূজাকে শ্বশুরবাড়িতে দিয়ে আসি। তারপর থেকে প্রায়ই নির্যাতন করত। তবু মেয়ে মুখ বুজে সব সহ্য করত।”

সুবোধবাবু আরও জানিয়েছেন, বুধবার খুব সকালে তাদের বরমপুর থেকে এক গ্রামবাসী ফোন করে খবর দেয় পূজা মারা গিয়েছে। খবর শুনে বরমপুর গ্রামে যায় পূজার পরিবার। কিন্তু সেখানে মেয়ের দেহ দেখতে না পেয়ে হাসপাতালে যান। মর্গ থেকে দেহ উদ্ধার করে তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বরমপুর গ্রামে পূজার শ্বশুরবাড়িতে পুলিশ গেলে সেখানে কৃষ্ণ পণ্ডিত ও পূজার দেড় বছরের মেয়েকে দেখা যায়। বাকিরা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ শিশুটিকে তার মামাবাড়ির হাতে তুলে দেয়। কৃষ্ণ পণ্ডিতকে আটক করে। মৃতার বাবা এই ঘটনায় পূজার স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, দুই ননদ-সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গিয়েছে।