মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় তিলত্তমা ঢাকা,পরিচ্ছন্ন ঢাকা বাস্তবায়নে মরহুম আনিসুল হকের অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য এ্যাকশনে নেমেছেন প্যানেল মেয়র ডেইজি সারোয়ার। অবৈধ ও দখলদারদের হাত থেকে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ইতোমধ্যেই তিনি মাঠে নেমে গেছেন।
জুলাই এর ২০/২২ তারিখ হবে। মিরপুরের দ্বীপ নগরে ৫২ একর জমির মধ্যে গড়ে উঠেছিল বস্তি, ইটের ভাঁটা, দোকান ইত্যাদি অবৈধ স্থাপনা। মেয়র আনিস ভাই লন্ডনে যাওয়ার আগে তিনি ও আমরা সেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আমাদের সিটি কর্পোরেশনের জায়গা উদ্ধার করি। পরিকল্পনা মোতাবেক এখানে আধুনিক কসাই খানা,পার্কিং সহ আরো কিছু করা হবে। স্থানীয় সরকার দ্বারা এই কাজের উদ্বোধন করানো হবে। পরে তা আবার দখল হচ্ছিল যার ফলে আমরা আবার সেই জমি উদ্ধার করি।
নতুন বছরের শুরুতে ডেইজি সারোয়ার ফুটপাত দখলমুক্ত করতে প্রশাসনকে সাথে নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। গত বুধবার (২৪ জানুয়ারি) তিনি রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানার গণভবন এলাকার ফুটপাতে যেসব অবৈধ স্থপানা ছিল সব গুড়িয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে নতুন করে কেউ দখল করতে আসলে তাদের খবর আছে বলেও কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
ডেইজি সারোয়ার বলেন, ‘আনিস ভাইয়ের অসমাপ্ত কাজ করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। তিনি চেয়েছিলেন দখলমুক্ত ঢাকা উত্তর। প্রশস্ত ফুটপাত দিয়ে যেন সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারে সেদিক বিবেচনায় নিয়ে আমরা আবারো মাঠে নেমেছি।
পরিচয়ঃ
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ০৫নং বুধবারীবাজার ইউপির কুশিয়ারা তীরবর্তী চন্দরপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম ও রাজনৈতিক পরিবারের মেয়ে আলেয়া সারোয়ার ডেইজি। বাবা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ মতলিব আলী। চাচা ও মামারা সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। চাচা একে এম গউছ সিলেট-৬ আসনের এমপি ছিলেন এবং মামা বাবরুল হোসেন বাবুল ৭১-এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সিলেট পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি এক সেনা কর্মকর্তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তাঁরা এক মেয়ে ও এক ছেলের জনক। মেয়ে যুক্তরাজ্যে অ্যারো স্পেস নিয়ে এবং ছেলে দার্জিলিংয়ের সেন্ট যোসেফে পড়ছে।
আলেয়া সারোয়ার ডেইজি, ঢাকা উত্তর সিটির অতি পরিচিত এক নাম। সিলেটের মেয়ে হয়ে যিনি রাজধানী ঢাকা শহরে নেতৃত্ব দেয়ার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে সংরক্ষিত- ১২ নং ওয়ার্ডের (ওয়ার্ড নং ৩১, ৩৩ ও ৩৪) কাউন্সিলর নির্বাচন করেন। এর পূর্বে তিনি ঐ এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন।
মোহাম্মদপুর ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা তিনি, এছাড়াও লায়ন্স ক্লাব, এপেক্স ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিচরণ ছিল তাঁর। এজন্য দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল। সর্বমহলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে তিনি ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে জয়লাভ করেন। সিলেটের মেয়ে হয়ে ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে তাঁর এ জয়লাভ দেশ বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও আস্থাভাজন সিলেটের মেয়ে ডেইজি সারোয়ার। ২০১৩ সালের জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন ডেইজি। ২০০০সাল থেকেই সক্রিয় রাজনীতির অঙ্গনে নিজেকে প্রমাণ করে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট হয়ে উঠেন ডেইজি।
২০০০ সালেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ যুব মহিলালীগ গঠনের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠন করার কাজে যোগ দেন ডেইজি। শেখ হাসিনা প্রথমেই সিলেটে কমিটি গঠন করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তা পূরণের আশ্বাস দিয়ে কাজে লেগে যান ডেইজি সারোয়ার।
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করে পরামর্শ, উপদেশ ও সহযোগিতা নিয়ে আত্মীয়স্বজন বন্ধু- বান্ধব ও পরিচিতজনদের উদ্বুদ্ধ করে গঠন করেন যুব-মহিলা লীগ, সিলেটের কমিটি। স্বয়ং শেখ হাসিনাই এ কমিটির ঘোষণা করেন।
ডেইজির কাজে সন্তুষ্ট হয়ে শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বও দেন তাকে। সেখানেও কমিটি গঠনে সফলতা দেখান তিনি। একপর্যায়ে দেশের বিভিন্ন জেলা-থানার কমিটি গঠন শেষে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হলে সেখানে সাংগঠনিক পদ পান ডেইজি। অদ্য ২৫জুলাই ২০১৭ইং তারিখে নতুন কমিটি গঠন করা হলে সেখানেও সহ-সভাপতির পোষ্ট পান ডেইজি সারোয়ার।
এতদূর আসার পথে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায়ও পড়তে হয় ডেইজিকে। ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে কারাবরণ করতে হয় তাকে। এছাড়াও, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনা জেলে থাকা অবস্থায় নেত্রীকে দেখার আশায় প্রতিদিন সাবজেলের সামনে গিয়ে বসে থাকতেন ডেইজি। রাজপথেও ছিলেন সক্রিয়। অনির্বায কারণে ফের তাকে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করতে হয়।
রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াও ডেইজি সারোয়ার একজন সংগীত শিল্পী। ছোটকাল থেকেই তিনি গান গাইতেন গীটার বাজাতেন। তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী।
এছাড়াও তিনি একজন সফল উদ্যোক্তাও। দেশে প্রথমবারের মতো ডেইজি সারোয়ার আগ্রহী ৫০ জন নারী উদ্যোক্তা নিয়ে উইম্যান্স হলিডে মার্কেট চালু করেছেন। যা দেশ বিদেশে প্রচুর আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছে। মহাখালী বাস টার্মিনালের উত্তর পাশে নবনির্মিত মহাখালী পাইকারি কাঁচাবাজার প্রাঙ্গণে এই মার্কেটটি বসবে। সপ্তাহের ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার এই মার্কেটে আগ্রহী নারী ও পুরুষেরা গৃহস্থালিসহ নিত্যব্যবহার্য সব পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন।
সবমিলিয়ে ডেইজি সারোয়ার একজন সফল নেতৃত্বদানকারী হিসেবে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন। সেই ছোটকাল থেকেই তিনি নেতৃত্বদানকারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি ৭ম শ্রেণীতে থাকা কালেই ইয়েলো বার্ড লিডার ও পরবর্তীতে গার্লস গাইড লিডার ছিলেন। ঐ সময়ই তিনি দ্বিতীয় জাতীয় গার্লস গাইড ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি সিলেট বিভাগের প্রথম ভলিবল টিমের সদস্য হয়ে জাতীয় পর্যায়েও খেলার সৌভাগ্য অর্জন করেন। ঐটুকুন বয়সেই তিনি গাড়ি চালানো শিখে ফেলেন। ৭ম শ্রেণীতে থাকা কালেই সিলেটের স্থানীয় শিশু-কিশোর পত্রিকা ঝুমকোলতায় সাক্ষাৎকার দেন আলেয়া সারোয়ার ডেইজি।
তাঁর পিতৃভূমি চন্দরপুর গ্রামের লোকজন তাকে নিয়ে গর্ব করেন। তারা জানান, আমাদের গ্রামের মেয়ে রাজধানী ঢাকায় গিয়ে নেতৃত্ব প্রদান করছে যা আমাদের গৌরবের বিষয়। আমরা তাঁর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।