কে এই ধর্ষক বাবুল, বেড়িয়ে আসলো বেপরোয়া জীবনের রোমহর্ষক কাহিনী

কে এই বাবুল? কি তার পরিচয়? এমন প্রশ্নে বের হয়ে এসেছে বাবুল সম্পর্কে নানা অপকর্মের অভিযোগ। স্থানীয়রা জানান কালপিট বাবুলের বেপরোয়া জীবন যাপনের রোমহর্ষক কাহিনী। যার কর্মকাণ্ড সিনেমার কুৎসিত ভিলেনকেও হার মানায়।

গত ২১ জানুয়ারি হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জের ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের বিউটি আক্তারকে (১৪) বাড়ি থেকে অপহরণ করে বাবুল মিয়া ও তার সহযোগীরা। এক মাস তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। এরপর বিউটিকে তার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায় বাবুল।

বিউটির বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে এ ঘটনার পর গত ১ মার্চ বাবুল ও তার মা স্থানীয় ইউপি সদস্য কলমচানের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করেন।

অসহায় দিনমজুর সায়েদ আলী তার মেয়েকে তার শশুর বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। বাবুলের বিরুদ্ধে মামলা করায় বেশ ক্ষিপ্ত হয় বাবুল। এরপর গত ১৬ মার্চ রাতে পুনরায় বিউটিকে তার নানার বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষক করেই শুধু বাবুলের ক্ষোভ মিটেনি শেষ পর্য্ন্ত চরম নির্মমভাবে হত্যা করে বিউটির লাশ হাওরে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় দেশ জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়, নাড়া দেয় পুরোদেশকে।

পালিয়ে গিয়েও রক্ষা পায়নি পাষণ্ড ধর্ষণ ও খুনি বাবুল। সিলেটের বিয়ানীবাজার থেকে শুক্রবার রাতে সে র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়। আর ধরা পরার পর থেকেই বের হচ্ছে তার বেপরোয়া জীবন যাপনের রোমহর্ষক কাহিনী ।

ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের বাসিন্দারা জানান, বাবুল ফিল্ম স্টাইলে নারীদের উক্ত্যত্ত করে। হাতে বালা ও গলায় চেইন পরে বাবুল নিজ গ্রাম ও আশপাশের গ্রামের নিরহ, অসহায় ও প্রবাসীর স্ত্রীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে। মেম্বার মায়ের ছেলে বাবুলের প্রলভোনে পড়লেই সতীত্ব হারায় মেয়েরা। সংসার ভাঙ্গে ফাঁদে পা দেওয়া নারীদের।

২০১০ সালে একই গ্রামের তৌহিদ মিয়ার মেয়ে এবং সিলেটের এক প্রবাসীর স্ত্রী তাসলিমা আক্তারের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে পালিয়ে যায়। তাসলিমাকে বিয়ে করে বউয়ের স্বীকৃতি দিলেও বাবুলের কুরুচি সম্পন্ন স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হয় না। বিয়ের পরে সে জোরপূর্বক ও ফুসলিয়ে একাধিক মহিলার সঙ্গে গোপন সুসম্পর্ক স্থাপন করে। পরে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে শারীরিক অত্যাচার করে।

শুধু শারীরিক সম্পর্কই লম্পট ও খুনি বাবুলের নেশা নয়। রাস্তায় মেয়েদের ইভটিজ কিংবা স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েদের বাজে মন্তব্য করাও তার পৈশাচিক স্বভাব।

বিউটির বাবা সায়েদ আলী কান্না জড়িতকণ্ঠে জানান, লম্পট বাবুল শুধু আমার মেয়ে নয়, এলাকার অনেক মেয়ের লাঞ্ছনা ও সর্বনাশ করেছে। অভিযোগ করলে সে ও তার আত্মীয় স্বজন হুমকি ধমকি দেয়।

বিউটির মা হুসনে আরা বলেন, এলাকায় সে প্রভাবশালী হওয়ার কারণে নিরীহ লোকজন কেউ প্রতিবাদ করা সাহস পায় নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই গ্রামের একজন বাসিন্দা জানান, বাবুলের অপকর্ম এলাকার নিরীহ নারীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। সে বিভিন্ন স্থান থেকে তরুণীদের পটিয়ে এনে আড্ডার নামে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। কারো কথা শোনে না। কিছু কইলে ভয় দেখায়, হুমকি দেয়। মুরুব্বিদের এমনকি তার আত্মীয়দের কথাও কেয়ার করেন না। খারাপ হিসেবে চিহ্নিত লোকজনের সঙ্গে তার চলাফেরা।

বাবুল ওই অঞ্চলে চোর-ডাকাতের একটি বাহিনী গড়ে তুলেছে বলেও অভিযোগ করেন ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের এই বাসিন্দা।