জাতীয় সংগীত গাইতে কোরআনে নিষেধ কোথাই ?

বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া বাধ্যতামূলক হলেও কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসায় এই চর্চা নেই। তারই পরিপেক্ষিতে সম্প্রতি সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত গাওয়া বাধ্যতামূলক করে আদেশ জারি করে। এই আদেশের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে কুড়িগ্রামের সুখদেব ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম মিয়া ও ঢাকার কদমতলা মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক এ রিট দায়ের করেন।

আজ আদালত স্পস্ট জানিয়ে দিল, জাতীয় সংগীত গাইতে কোরআনে বাধা নেই। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদলতে রিটকারী আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকারকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, ‘আপনি দেখান পবিত্র কোরআনের কোথায় আছে জাতীয় সংগীত গাওয়া যাবে না? পবিত্র কোরআনের কোথাও নেই যে জাতীয় সংগীত গাওয়া যাবে না।’

আদালত আরও বলেন, আগে তো মাদ্রাসার সিলেবাসে অঙ্ক, ইংরেজি, বিজ্ঞান বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। যুগের চাহিদা অনুযায়ী সে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ইসলাম ধর্ম ডে বাই ডে (দিন দিন) উন্নত হচ্ছে। প্রকান্তরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করার জন্যই এ রিট করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আদালত।

আদালত বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংগীত গাইবে আর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা গাইবে না, এটা তো হতে পারে না। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা দেশের বাইরে গেলে যখন বিদেশিরা জাতীয় সংগীতের বিষয়ে জানতে চাইবে তখন শিক্ষার্থীরা কী জবাব দেবে?’ আদালত আরও যোক করে ব্রটিশ আমলে আমরা ইংরেজি না শিখে পিছিয়ে পড়েছিলাম। আর মাদ্রাসা শিক্ষাকে পিছিয়ে রাখতেই এই রিট করা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।