‘জাপাকে সবাই হিজড়া পার্টি বলে’

শনিবার ২৪ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে জাপার মহাসমাবেশে। আজকের সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বিরোধী দলে থেকেও সরকারি পদপদবি পাওয়া জাতীয় পার্টির(জাপা) তৃণমূলের অবস্থা খুব একটা ভালো নেই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে তাদের কটু কথাসহ নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।

তারা বলেন, ‘গ্রামে মুখ দেখাতে পারেন না নেতাকর্মীরা। সবাই জাপাকে হিজড়া পার্টি বলে। আওয়ামী লীগের নেতারা চাপে রাখেন, বিএনপিও দূরে ঠেলে দিয়েছে। সত্যিকার অর্থেই তৃণমূলে দলের অবস্থা শোচনীয়।’

জাপার অঙ্গ-সংগঠন ইসলামিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি আবদুর রহমান ভাণ্ডারী এসেছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে।

তিনি বলেন, ‘ভৈরবে জাতীয় পার্টির অবস্থা বরাবরই ভালো ছিল, হয়ত এখনো আছে। বিরোধী দলে থেকেও আমরা মন্ত্রী, এটিকে তো ভালোই বলতে হবে। লোকজন এখন আমাদের দেখলে চোখ টেপে, হাসাহাসি করে।’

ক্ষোভ এব্ং আক্ষেপ করেই আবদুর রহমান বলেন, ‘সরকারের দু’জন মন্ত্রী আছেন, যারা জাতীয় পার্টির। এই হিসাবে বিরোধী দলেও জাপা, সরকারি দলেও আছে। দীর্ঘ ২৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে দুটি স্ট্যাটাস অর্জিত হয়েছে। আমরাই সরকার, আমরাই বিরোধী দল। এগুলোকে তো ভালোই বলতে হবে।’

নড়াইল থেকে সমাবেশে আসা জেলা পৌর সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আগের থেকে এখন জাতীয় পার্টির অবস্থা বেশ ভালো। আমরা আমাদের তরুণদের নিয়ে নির্বাচনের দল সাজাচ্ছি। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আমরা নতুন কমিটি গঠন করছি।’

অনেটা দুঃখ করে তিনি বলেন, ‘এতকিছু করেও দলকে আমরা পরিপূর্ণ রূপ দিতে পারছি না। কেন্দ্রীয় নেতারা এলাকায় আসেন না। তাদের পেলে কর্মীরা আরও চাঙ্গা হতে পারতেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের ফোন দিলেও ধরেন না। জেলার নেতাকর্মীরা সুখে-দুখেও তাদের পান না। এই কারণে দলে অনেক উন্নয়ন করলেও জেলায় দলের অবস্থা বেশ শোচনীয়।’

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার সাধারণ সম্পাদক হুসেইন আলী স্বীকার করেন, ‘জাতীয় পার্টির সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো- সবাই দলটিকে ব্যবহার করে। আওয়ামী লীগ প্রয়োজনে কোলে নেয়, প্রয়োজন ফুরালে লাথি মারে। বিএনপিও একই আচরণ করে। এ থেকে যতদিন না বের হব, ততদিন কর্মীদের সামনে কোনো আশা নেই।’

শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় পার্টি। এদিন সকাল থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাসে করে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেন।

মহাসমাবেশ থেকে জাপা চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামীতে এককভাবে অংশ নিলে এবং নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জাপার ক্ষমতায় আসার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন তৃণমূলের নেতারা।