জয় দিয়ে সুপার লিগ শুরু মাশরাফিদের

প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ মানেই মিরপুরের গ্যালারি খা খা। তবে আবাহনীর ম্যাচ হলে গ্র্যান্ড স্টান্ডে অন্তত কিছু গলা ফাটানোর লোক থাকে। সেই সুযোগটা আজ তারা ভালোমতোই পেলেন। শুরুতে হোঁচট খেয়ে আবাহনী সেই ধাক্কা সামলে উঠল ভালোমতোই। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ৭৩ রানে হারিয়ে সুপার লিগের শুরুটা জয় দিয়েই করল আবাহনী।

অথচ শুরুতে ব্যাট করে আবাহনী বেশ বিপদেই পড়ে গিয়েছিল একটা সময়। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ছয় মেরে শুরু এনামুল হক বিজয়ের। কিন্তু তৃতীয় ওভারেই আবু হায়দার রনির বলে হয়ে যান বোল্ড। স্কোরবোর্ডে তখন কেবল ১০ রান উঠেছে, ১৭ রান উঠতে ফিরে গেলেন আগের ম্যাচে ১৫০ করা নাজমুল হোসেন শান্তও। সাইফ হাসান ছিলেন, কিন্তু খেলছিলেন খুবই শম্বুক গতিতে। শেষ পর্যন্ত ৬৩ বলে ৩০ রানের ধুঁকতে থাকা ইনিংসটা শেষ হলো মুমিনুল হকের বলে ক্যাচ দিয়ে। এরপর ৯১ রানে নাসির হোসেনও ফিরে গেলে ভালোমতোই বিপদে পড়ে যায় আবাহনী। ওভার তখন অর্ধেকেরও বেশি পার হয়ে গেছে, আবাহনীর ২০০ রান করা নিয়েই তখন সংশয়।

কিন্তু ভারতের হনুমা বিহারী ও মোহাম্মদ মিঠুন শুরু করলেন পালটা আক্রমণ। বিহারীর শুরুটা ছিল স্লথ, ফিফটি করেছিলেন ৮০ বলে। পরের ফিফটি করতে খেলেছেন মাত্র ৩৭ বল, শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি এসেছে মাত্র ১১৭ বলে। মিঠুন-বিহারী মিলে ১৩৭ রান তুললেন ১৯.৩ ওভারে। শেষ পর্যন্ত ১২৪ বলে ১০৯ রান করে আউট হয়ে গেছেন মাহাদী হাসানের বলে।

এর পরেই শুরু আসলে আবাহনীর শেষের তান্ডব। মাশরাফি বিন মুর্তজা ক্রিজে এসেই মারলেন চার, তারপরও স্কোর ২৫০ হবে কি না সংশয় ছিল। কিন্তু শেষ ওভারে মোসাদ্দেক এমনই তাণ্ডব চালালেন, তাতেই ম্যাচটা প্রায় গাজীর ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেল আবাহনী।

নাঈম হাসানের ওভারের প্রথম দুই বলে এলো তিন। চতুর্থ বলে মোসাদ্দেক হোসেন চার মারলেন, পরের তিন বলে এলো তিন ছয়। সবকটিই মোটামুটি বিশাল, নার্ভাস হয়ে নাঈম বলও করলেন এলোমেলো। ৬ বলে ২৩ রান নিয়ে মাঠ ছাড়লেন মোসাদ্দেক, শেষ ওভার থেকেই এলো ২৫ রান। ওপাশে ৬১ বলে ৭২ রান করে অপরাজিত মোহাম্মদ মিঠুন। আবাহনী পেল ২৭৮ রানের পুঁজি।

সেই রান তাড়া করে শুরু থেকেই হোঁচট খেয়েছে গাজী গ্রুপ। ৭ রানে নেই জহুরুল ইসলাম, ২২ রানের মধ্যে নেই ইমরুল কায়েস। ২৫ রানের মধ্যে ফিরে যান মাহেদীও। মুমিনুল হক চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ভালো খেলতে খেলতেই আউট হয়ে যান ৫১ বলে ৪৬ রান করে। ম্যাচটা কার্যত ওখানেই শেষ। ভারতের অনুস্তাপ মজুমদার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁর ৮০ বলে ৬৪ রানের ইনিংসটা শেষ পর্যন্ত সান্ত্বনাই হয়ে থেকেছে। শেষ পর্যন্ত ৪৩ ওভার খেলেই ২০৫ রানে অলআউট হয়ে গেছে গাজী গ্রুপ। ৪ উইকেট নিয়ে সানজামুল ইসলাম ছিলেন সফলতম বোলার। মাশরাফি বিন মুর্তজা, মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদ নিয়েছেন দুইটি করে উইকেট।

এই জয়ের পর ১২ ম্যাচে আবাহনীর পয়েন্ট ১৮, আর সমান ম্যাচে গাজীর পয়েন্ট থাকত ১২-তেই।