তথ্যমন্ত্রীর উপর ক্ষোভ প্রকাশ, পদত্যাগ চাইলেন চলচ্চিত্র কর্মীরা

বুধবার এক এফডিসিতে এক একান্ত বৈঠক বসে এফডিসি কর্তৃপক্ষ ও এফডিসিতে অবস্থিত চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশরীদের সকল সবকটি সংগঠন। আগামী ৩ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র দিবস। দিনটিকে নানা আয়োজনের মাধ্যমে পালন করার উদ্যোগ নিয়েছেন এফডিসি কর্তৃপক্ষ ও এফডিসিতে অবস্থিত চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশরীদের সকল সবকটি সংগঠন। এবার এ চলচ্চিত্র দিবস পালনের কমিটি গঠন নিয়েই বাধলো বিপত্তি। যার জের ধরেই তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে দাঁড়ালেনসকল চিত্রতারকা ও সিনেমার কলাকুশলীরা। মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে চলচ্চিত্রকর্মীদের সমন্বিত সংগঠন ‘চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটি’।বুধবার এক এফডিসিতে এক একান্ত বৈঠক শেষ এই কথা জানালেন কমিটির সভাপতি অভিনেতা ফারুক।

সেখানেই ক্ষুব্ধ নেতারা চলচ্চিত্র উৎসবে তথ্যমন্ত্রীকে এই মন্ত্রণালয় থেকে অপসারণের দাবি জানান।

জানা গেছে, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সভাপতি রাখা হয় চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব হাসান ইমামকে। পরে তাকে বাদ দিয়ে উপরমহলের নির্দেশে এফডিসির এমডিকে কমিটির সভাপতি বানানো হয়। এতে করেই সমস্যা শুরু হয়।

এ সম্পর্কে সংগঠনের সভাপতি ফারুক বলেন, এর আগে জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে নায়করাজ রাজ্জাক ভাইকে সভাপতি করা হতো। এবার তিনি নেই। তাই সর্বসম্মতিক্রমে চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী পুরুষ সৈয়দ হাসান ইমামকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি মিটিং হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার (২৭ মার্চ) বিএফডিসির এমডি আমীর হোসেন মোবাইলে কল দিয়ে সৈয়দ হাসান ইমামকে এই পদে না থাকার জন্য উপর মহলের আদেশ আছে বলে জানান। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এ সময় ফারুক আরও বলেন, সৈয়দ হাসান ইমাম আমাদের সবার মুরুব্বী। চলচ্চিত্র উৎসবের সভাপতিত্বে তাকেই মানায়। তাই তাকে সবাই মিলে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তাকে সরিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা মানে আমাদের চলচ্চিত্রের প্রতিটি মানুষকেই অপমানের চেষ্টা। বিএফডিসির এমডির উপর মহলটা কে? অবশ্যই তথ্যমন্ত্রী। যে মন্ত্রী সমগ্র চলচ্চিত্রের মানুষকে অপমান করেন তাকে আমরা আমাদের অভিভাবক হিসেবে দেখতে চাই না। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তথ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে। শিগগিরই আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত দাবি নিয়ে যাবো।

তিনি তথ্যমন্ত্রীর উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মন্ত্রী চলচ্চিত্রের বড় সমস্যা দূর করার চেষ্টা করছেন না। তিনি সিনেমা রিলিজের তারিখ ঠিক করে দেয়ার মতো ছোটখাটো বিষয়ে নাক গলাচ্ছেন। এইসবকে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতির চর্চা ইন্ডাস্ট্রিতে শুরু হয়েছে। কথা ছিলো সরকারিভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ৫০টি হল ডিজিটাল করা হবে। সেখানে ডিজিটাল মেশিন বসবে। মন্ত্রী নিজেই এই ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রায় এক বছর পার হতে চললেও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। তিনি নানা রকম প্রতিশ্রুতি দিয়েই সময় পার করেছেন। অনেক সময় প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি রাখার চেষ্টাও করেন না। অভিযোগ আছে একটি বিশেষ চলচ্চিত্র প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ পন্থায় বারবার সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাই এই মন্ত্রীর পদত্যাগ চাই আমরা।

তবে এই বিষয়ে বিএফডিসির এমডি আমীর হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, বুধবারের কার্যদিবস শেষ হয়ে যাওয়ায় এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি বিএফডিসির এমডি আমীর হোসেন। বৃহস্পতিবার এই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা আলমগীর, প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু, পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর রশিদ চৌধুরী, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাইমন সাদিক, নৃত্যশিল্পী সমিতির সভাপতি মাসুম বাবুল, নির্মাতা এস এ হক অলীক ও নির্মাতা মোহাম্মদ হোসেন জেমী।