ফাঁস হলো নেপালের বিমানবন্দর থেকে পাইলটদের ভুল বার্তার আরো কাহিনী!

কাঠমান্ডু ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটিতে এ পর্যন্ত ৭০টিরও বেশি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর এসব দুর্ঘটনায় পাঁচ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সর্বশেষ দুর্ঘটনায় পতিত হলো ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১। এ দুর্ঘটনার কারণ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার থেকে প্রায়ই পাইলটদের ভুল ও বিভ্রান্তিকর বার্তা।

দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য হিমালয়ান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এটিসি টাওয়ার থেকে প্রায়ই পাইলটদের কাছে ভুল বার্তা দেয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে বেশ অভিযোগ রয়েছে যে দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার থেকে প্রায়ই পাইলটদের ভুল ও বিভ্রান্তিকর বার্তা দেয়া হয়।

এমনি এক ভুল বার্তায় গত ১২ মার্চ সোমবার দুপুরে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে দুর্ঘটনায় পড়ে। বিমানবন্দরের এটিসি টাওয়ার থেকে ভুল অবতরণ বার্তা দেয়ায় আকাশে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে অবশেষে ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। এতে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত হন। আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন ১০ বাংলাদেশিসহ ২১ জন।

নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এটিসি টাওয়ার থেকে পাইলটদের কাছে ভুল বার্তার ব্যাপারে ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ প্রকাশিত দ্য হিমালয়ান টাইমসের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘একাধিক পাইলট দ্য হিমালয়ান টাইমসকে জানান, তারা প্রায়ই এটিসি টাওয়ার থেকে ভুল বার্তা পান।’

শুধু এটিসি টাওয়ারই নয়; দেশটির আবহাওয়া বিভাগও (ডিএইচএম) নেপালের আবহাওয়া-সংক্রান্ত ভুল তথ্য প্রকাশ করে বলে অভিযোগ অনেক পাইলটদের।

ভুল বার্তা পাওয়ার বিষয়ের কথা জানিয়ে সিনিয়র এক পাইলট বলেন, বিমান অবতরণের জন্য তিনি ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এটিসি টাওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে টাওয়ার থেকে জানানো হয় যে, বিমানবন্দরের দৃষ্টিসীমা তিন কিলোমিটার। কিন্তু ডিএইচএমের তথ্য অনুযায়ী, সে সময় বিমানবন্দরের দৃষ্টিসীমা ছিল দেড় কিলোমিটারের কম।

এ ধরনের স্পর্শকাতর ব্যাপারে ভুল তথ্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে উল্লেখ করেন অধিকাংশ সময় বোয়িং ৭৫৭-২০০ ফ্লাইট পরিচালনা করা ওই সিনিয়র পাইলট।

তবে শুধু ত্রিভুবন বিমানবন্দরেই নয়, নেপালের লুকলার তেনজিং হিলারি বিমানবন্দরেও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় পাইলটদের। বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিমানবন্দরের তালিকায় রয়েছে লুকলার এই বিমানবন্দর।

অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের এক পাইলট হিমালয় টাইমসকে বলেন, লুকলার তেনজিং হিলারি বিমানবন্দরের টাওয়ার থেকে প্রায়ই ভুল এবং বিভ্রান্তিকর বার্তা দেয়া হয়।