বলিউডের ৫ জন প্রিয় তারকার অজানা তথ্য

বলিউডের সিনেমার মুভি সারা বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। জনপ্রিয় সেই মুভির নায়ক-নায়কাদের প্রকৃ্ত নাম ও তাঁর সম্পর্কে অবশ্যই জানা থাকা ভালো। জেনে নিন আপনার প্রিয় ৫ তারকার সম্পর্ক অজানা তথ্য।

শ্রীদেবী (১৩ আগস্ট ১৯৬৩ – ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)


শ্রীদেবী কাপুর। প্রকৃত নাম শ্রী আম্মা ইয়াঙ্গের আয়্যাপান। একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী যিনি তামিল, তেলুগু, হিন্দি, মালয়ালম এবং কিছু সংখ্যক কন্নড় চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রে প্রথম নারী সুপারস্টার বিবেচিত হন।

বিনোদন শিল্পে তার অবদানের জন্য ২০১৩ সালে ভারত সরকার তাকে দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করে। এছাড়া তিনি তামিল নাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ ও কেরালা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সম্মানসূচক পুরস্কার লাভ করেন। ভারতীয় চলচ্চিত্রের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ২০১৩ সালে সিএনএন-আইবিএনের এক জরিপে তিনি ‘১০০ বছরে ভারতের সেরা অভিনেত্রী’ হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজক বনি কাপুরের স্ত্রী।

শ্রীদেবী তামিলনাড়ুতে ১৯৬৩ সালের ১৩ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন আইনজীবী। তার এক বোন ও ২ সৎ ভাই আছে। ১৯৯৬ সালে তিনি চলচ্চিত্র প্রযোজক বনি কাপুরকে বিয়ে করেন। তাদের দুই মেয়ে জানভি এবং খুশি।

অনেক সূত্র জানা যায় যে, শ্রীদেবী’র সাথে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৭ সালের মধ্যে এ সম্পর্ক বজায় ছিল যা শ্রীদেবী পরবর্তীতে সম্পর্ক ছেদ করেন। এর প্রধান কারণ ছিল – প্রথম স্ত্রী যোগীতা বালীকে মিঠুন কর্তৃক বিবাহ-বিচ্ছেদ না ঘটানো। তাঁরা অত্যন্ত গোপনে বিয়ে করেছিলেন বলে জানা যায়, যদিও তা পরবর্তীতে অস্বীকার করা হয়।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ দুবাই একটি হোটেলে বাথটেবে শ্রীদেবীর মৃত্যু হয়।

মাধবন


মাধবন। প্রকৃত নাম রঙ্গনাথান মাধবন ।জন্ম ১ জুন ১৯৭০। একজন ভারতীয় অভিনেতা, লেখক এবং ফিল্ম প্রযোজক। মাধবন দুটি ফিল্মফেয়ার এ্যাওয়ার্ড, একটি তামিলনাড়ু স্টেট ফিল্ম এ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। তিনি ভারতের অন্যতম অভিনেতা যিনি ভারতের একাধিক ভাষার ফিল্মে অভিনয় করেছেন, যদিও তিনি মূলত একজন তামিল চলচ্চিত্রাভিনেতা।

মাধবন তার অভিনয় জীবন শুরু করেন বিভিন্ন টিভি সিরিয়ালে অতিথি চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে, এর মধ্যে তিনি জী টিভিতে প্রচারিত ‘বানেগি আপনি বাত’ (১৯৯৬) তে অভিনয় করেন। এভাবে অনেক নাটক এবং বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করার পর মাধবন তামিল চলচ্চিত্র শিল্পে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যান মণি রত্নমের দ্বারা, মণি তাকে তার ‘আলাইপায়ুদে’ চলচ্চিত্রে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেন আর মাধবন রাজী হয়ে যান।

পরের বছর তার গৌতম মেননের পরিচালনায় তামিল চলচ্চিত্র ‘মিন্নালে’ মুক্তি পায় আবার ঐ একই বছর তার এই চলচ্চিত্রের হিন্দি সংস্করণ ‘র‍্যাহনা হে তেরে দিল মে’ সাইফ আলী খান এর সঙ্গে মুক্তি পায়। এছাড়া মাধবন রং দে বাসন্তী (২০০৬) এবং থ্রী ইডিয়ট্স এর মত কিংবদন্তী হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছেন যেখানে তার সঙ্গে আমির খানও ছিলেন।

নূতন(৪ জুন, ১৯৩৬ – ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯১)


নুতন। পুরো নাম নুতন সমর্থ বেহেল। জন্ম ৪ জুন, ১৯৩৬। তৎকালীন বোম্বে প্রেসিডেন্সির মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ভারতীয় অভিনেত্রী ছিলেন। নূতন নামেই দর্শকমহলে সমধিক পরিচিত ছিলেন তিনি। চার দশককাল সুদীর্ঘ চলচ্চিত্র জীবনে ৭০-এর অধিক হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁকে হিন্দি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা পরিচ্ছন্ন নারী অভিনেত্রী হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

বিশিষ্ট পরিচালক ও কবি কুমারসেন সমর্থ এবং তাঁর অভিনেত্রী পত্নী শোভনা সমর্থের চার সন্তানের একজনরূপে জন্মগ্রহণ করেন।মারাঠি পরিবারের জ্যেষ্ঠ সন্তান ছিলেন তিনি। তনুজা ও চতুরা নাম্নী ছোট দুই বোন এবং এক ভাই ছিল। তন্মধ্যে তনুজা সফল অভিনেত্রী ছিলেন। শৈশবেই বাবা-মায়ের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরবর্তীকালে তনুজা’র কন্যা ও বোনঝি কাজলও সফল অভিনেত্রীর মর্যাদা লাভ করেছেন।

১৯৫০ সালে চৌদ্দ বছর বয়সে হামারি বেটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয়কর্মের সূচনা ঘটান। তাঁর মা শোভনা সমর্থ চলচ্চিত্রটির পরিচালক ছিলেন। এরপর নাগিনা ও হামলোগে ধারাবাহিকভাবে ১৯৫১ সালে অভিনয় করেন। ১৯৫২ সালে তিনি মিস ইন্ডিয়া শিরোপা জয় করেন।

১৯৫৫ সালে সীমা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ব্যাপক সফলতা লাভ করেন। সীমা চলচ্চিত্রে অনবদ্য ভূমিকার কারণে তিনি প্রথমবারের মতো সেরা অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন। তিনি তাঁর এ সফলতা ধরে রাখেন আবেগধর্মী পেয়িং গেস্ট চলচ্চিত্রে। এ চলচ্চিত্রে তাঁর নায়ক ছিলেন দেব আনন্দ। ১৯৫৯ সালে রাজ কাপুরের সাথে আনারী ও বিমল রায়ের সুজাতা চলচ্চিত্রে সুনীল দত্তের সাথে অভিনয় করেন। দুটো ছবিই দর্শকমহলে সাড়া জাগায়। ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে চালিয়া, স্বরস্বতীচন্দ্র, দেবী ও মে তুলসী তেরে অঙ্গন কি’র ন্যায় চলচ্চিত্রগুলো সফলতা লাভ করে। ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯১ তিনি পরলোক গমন করেন।

রেখা


রেখা। প্রকৃত নাম ভানুরেখা গণেশন। রেখা তামিল অভিনেতা জেমিনি গণেশন ও তেলেগু অভিনেত্রী পুষ্পাভ্যাল্লীর ঘরে ভারতের চেন্নাইয়ে (পরে মাদ্রাজ) ১০ অক্টোবর, ১৯৫৪ সালে জন্মগ্রহন করেন। হিন্দী চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রেখা নামেই বেশি পরিচিত। রেখাকে বলিউডের চিরসবুজ যৌন আবেদনময়ী অভিনেত্রী হিসেবে মনে করা হয়। ১৯৬৬ সালে রাঙ্গোলা রত্নাম নামে একটি তেলেগু ছবির মাধ্যমে শিশুশিল্পী হিসেবে তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয়।

কিন্তু নায়িকা হিসেবে ১৯৭০ সালে শাওন ভাদো নামে একটি ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি বলিউডে যাত্রা শুরু করেন।[৩] যদিও প্রথম দিকে তার কিছু ছবি সাফল্য পায় কিন্তু সত্তর এর দশকের মাঝের দিকে রেখা অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেন। তিনি প্রয়ই তার সৌন্দর্য নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং যখন তিনি প্লাস্টিক সার্জারি সম্পন্ন করেন তখন ভারতীয় মিডিয়া তাকে সেক্স সিম্বল হিসেবে আখ্যায়িত করে।

৪০ বছরের অভিনয় জীবনে রেখা ১৮০টির উপরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। রেখা তিনবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেন, দুইবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে ও একবার শ্রেষ্ঠ সহঅভিনেত্রী হিসেবে। ১৯৮১ সালে উমরাহ জান চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার লাভ করেন।

গোবিন্দ


গোবিন্দ। জন্মনাম গোবিন্দ অরুন আহুজা। জন্ম ২১ ডিসেম্বর ১৯৬৩। একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা, বলিউডে অভিনয়ের জন্য পরিচিত। একজন প্রাক্তন রাজনীতিবিদ, গোদিন্দ ১২ বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন পেয়েছেন, এবং তিনি ফিল্মফেয়ার বিশেষ পুরস্কার এবং ফিল্মফেয়ার সেরা কমেডিয়ান অভিনেতা পুরস্কার অর্জন করেছেন। এছাড়া তিনি চারবার জি সিনেমা পুরস্কার জিতেছেন।

১৯৮৬ সালে ইলযাম সিনেমার মাধ্যমে তার অভিষেক ঘটে, তিনি ১৪০ টির বেশি হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ১৯৯৯ সালের জুনে, বিবিসি নিউজ অনলাইনের সদস্যদের দ্বারা বিগত হাজার বছরের সেরা দশজন তারকার একজন নির্বাচিত হন।