বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের আচরণে চরম হতাশ, ক্ষুব্ধ লঙ্কানরা

শ্রীলঙ্কানদের মাটিতে ফাইনাল, অথচ তারা আজ দর্শক, এই হতাশা মানতে পারছেন না কোন শ্রীলংকা। কলেম্বোতে এখন টক অব দ্য সিটি শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচ। শ্রীলঙ্কার হেরে যাওয়া, হট্টগোল এবং তাদের ভাষায় বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ঔদ্ধত্য। বেশিরভাগ শ্রীলঙ্কান বাংলাদেশের উপর বেজায় চটে আছেন। ট্যাক্সি ওয়ালা, হোটেল কর্মী থেকে শুরু করে সবার মন খারাপ। শুধু মন খারাপ নয়, রীতিমত ক্ষুব্ধ তারা।

লঙ্কানরা তাদের হাতাশা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রতি যে তাদের সফট কর্নার ছিল এতদিন, সেটা উঠে গেছে এই ঘটনার পর। কলম্বোর যে হোটেলে থাকি, এখানকার ম্যানেজারেরও ভীষণ মুড অফ। এতদিন হাসিমুখে কথা বলেছেন, আন্তরিকতা দেখিয়েছেন, পরশু রাতের ঘটনার পর থেকে তিনি মুখ কালো করে রেখেছেন।

ড্রেসিং রুমের দরজার গ্লাস ভেঙেছে আসলে অনিচ্ছাকৃতভাবে। জয় উৎযাপন করতে গিয়ে অসাবধনতাবশত হয়েছে। তাদের দাবি ইচ্ছা করেই এমনটা করা হয়েছে। এবং শ্রীলঙ্কা মাটিতে এসে চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।তারা এই ঔদ্ধত্যের বিচার চায়।

ম্যাচের সময় সাকিব যে আচরণ করেছেন, তার জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ জরিমানা ও একটি ডিমেরিট পয়েন্ট। ডিমেরিট পয়েন্ট আইসিসির খারাপ আমল নামার সূচক। কিন্তু এই শাস্তিতে শ্রীলঙ্কানরা বড়ই হতাশ। তারা মনে করছেন, আইসিসি বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাকিব যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তাতে অন্তত দুই এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়া উচিৎ ছিল এবং সঙ্গে মোটা অঙ্কের জরিমানাও।

শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের একজন ককর্মকর্তা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা সবসময়ই বাংলাদেশ ক্রিকেটের  পাশে থেকেছি।শুধু বাংলাদেশ নয়, লক্ষ্য করবেন- পাকিস্তান ক্রিকটের দুর্দিনে কীভাবে পাশে থাকছে শ্রীলঙ্কান। কারণ শ্রীলঙ্কা ছোট দেশ হতে পারে, হৃদয়টা অনেক বড়। বাংলাদেশ ভালো করছে, এ জন্য আমরা খুব খুশি। আমাদের ‍গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এগুলো খেলোয়াড়দের মনে রাখা উচিৎ ছিল।’

জানা গেছে, সাকিবকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তাতে মোটেও খুশি নয় শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। এই শাস্তির বিপক্ষে নাকি আইসিসিতে আপিল করা হয়েছে। অবশ্য শ্রীলঙ্কান ওই বোর্ড কর্মকর্তা এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। তবে ঘটনা সত্য যে, সাকিবের বর্ধিত শাস্তি চেয়ে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড আপিল করেছে আইসিসি বরাবর। তারা সাকিবের এক দুই ম্যাচ অন্তত নিষেধাজ্ঞা চান। তবে যতদূর  মনে হচ্ছে, আইসিসি আগের শাস্তিই বহাল রাখবে।

ডেসিংরুমের দরজা ভাঙাকে বড় রকমের অপরাধ হিসেবে দেখছে শ্রীলঙ্কান ক্রিটে বোর্ড। তারা মনে করছেন না যে, এটা অনিচ্ছাকৃতভাবে ভাঙা হয়েছে। নো বল ইস্যুর জের ধরেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে বিশ্বাস করেন শ্রীলঙ্কান বোর্ডের ওই কর্মকর্তা। এবং এটাকে চরম হতাশাজনক ও অভদ্র আচরণ বলে জানিয়েছেন তিনি।