বিষ খাইয়ে মেয়েকে মারল মা, পুড়িয়ে প্রমান লোপাট বাবার

মায়ের তৈরি করে দেওয়া ফলের রসে কয়েক চুমুক দেওয়ার পরই তা সরিয়ে দিয়েছিল মেয়ে। কিন্তু, ফের তা জোর করে তার মুখে ঢেলে দিয়েছিলেন বাবা। রস পেটে যাওয়ার পরই কুঁকড়ে যেতে শুরু করেছিল বছর কুড়ির তরুণীর শরীর।

এর পর প্রায় ৬ ঘণ্টা মেঝেতে শুয়ে কাতরাতে থাকে সে। তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত গোটাটাই নজরে রাখছিলেন বাবা। পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য নিজের খামারেই তিনি পুড়িয়ে দিয়েছিলেন মেয়ের দেহ।

ঘটনাটি মহীশূর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে গোল্লানাবিদু গ্রামের। সুষমা গৌড়া নামে ওই তরুণীকে পারিবারিক সম্মানরক্ষার জন্য খুন করেছে তাঁর পরিবার— এমন অভিযোগ শোনার পর এ বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় তাঁর বাবা কুমার গৌড়াকে। পুলিশি জেরায় তিনি ফলের রসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে মেয়েকে খুন করার কথা স্বীকার করেন।

তিন বোনের মধ্যে সুষমা সব থেকে বড়। কলেজে পড়তে পড়তেই পড়া ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় চিত্রশিল্পী ওই দলিত যুবকের সঙ্গে বছরখানেক ধরে সম্পর্ক সুষমার। যদিও ওই দলিত যুবকটির নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, পেশায় কৃষক কুমার তাদের জানিয়েছেন, এক দলিত যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সুষমার। প্রতিবেশী আলানাহাল্লি গ্রামের ওই যুবককে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেটা জানার পরই গত ডিসেম্বরে সুষমাকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল তাঁর পরিবার। গত মাসের কুড়ি তারিখ বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় সুষমাকে। সে দিন রাতে ওই দলিত যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বাবার সঙ্গে তর্কবিতর্কও চলে মেয়ের। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ মেয়ের জন্য ফলের রস তৈরি করে আনেন মা জয়ন্তী। কয়েক চুমুক খাওয়ার পরই তা ফিরিয়ে দেন সুষমা। তার পরই সেই রস জোর করে মেয়ের মুখে ঢেলে দিয়েছিলেন বাবা।

জেয়ার কুমার স্বীকার করেছেন, বিষাক্ত রস খেয়ে ভোর চারটে পর্যন্ত খামার বাড়িতেই পড়ে থাকেন সুষমা। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এর পর ভোর পাঁচটা নাগাদ মেয়েকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কুমারকে এই কাজে সাহায্য করেন স্ত্রী জয়ন্তী এবং তাঁর ভাই কেমপান্না। ঘটনার পর থেকেই ওই দু’জনেই পলাতক। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এন রুদ্রমুনি জানিয়েছেন খুন এবং প্রমাণ লোপাটে সাহায্য করার অভিযোগে জয়ন্তী এবং কেমপান্নাকে খুঁজছে পুলিশ।