বৃষ্টিতে ভেসে গেল স্কটিশদের বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন

২০১৯ সালের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে পাঁচ রানে হেরেছে স্কটল্যান্ড। হারারেতে প্রথমে টস হেরে ব্যাটিং করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচের শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে ক্যারিবিয়ানরা। বৃষ্টিতে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন ভেসে গেল স্কটিশদের।

প্রথম বল থেকেই ধুঁকতে থাকে উইন্ডিজরা। ম্যাচের প্রথম বলেই ওপেনার ক্রিস গেইলকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাফইয়ান মোহাম্মদ শরীফের এক দুর্দান্ত ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ক্রিস গেইল।

নিজের পরের ওভারে আবারো স্কটল্যান্ডকে আনন্দে ভাসান সাফইয়ান। অফ স্টাম্পের বাইরের এক বলে শাই হোপকে পরাস্ত করেন সাফইয়ান। ক্যাচ ধরেন উইকেটরক্ষক। রানের খাতা খোলার আগে গেইল এবং হোপ বিদায় নিলে ব্যাটিং বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দেয়। সেই বিপর্যয়ের শঙ্কা দূর করে মারলন স্যামুয়েলস এবং এভিন লুইসের জুটি। ২ উইকেটে ২ রান থেকে ৩ উইকেটে ১২৩ রানে পৌঁছে দেন দলকে। বড় জুটি গড়লেও মন্থর গতিতে ব্যাটিং করছিলেন দুজন। ব্যাট চালাচ্ছিলেন দেখেশুনে, রান আসছিল ধীরলয়ে।

দলীয় ৫২ রানের মাথায় ইভান্সের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হতে পারতেন এভিন লুইস। ফিল্ডারের দারুণ প্রচেষ্টার পরও সফল হতে না পারলে বেঁচে যান তিনি।

দলীয় ১২৩ রানের মাথায় ব্র্যাড হুইলের ভেতরে ঢোকা এক ডেলিভারি মিড উইকেট দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। ব্যাটে না লেগে প্যাডে বল লাগলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন লুইস। ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৮৭ বলে ৬৬ রান করে বিদায় নেন এ বাঁহাতি ওপেনার।

এ জুটি ভাঙার পর আবারো তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং অর্ডার। শুরুর দিকের বেহাল চিত্রের পুনরাবৃত্তি ঘটে আবারো। মারলন স্যামুয়েলস অর্ধশতকের পরেই বিদায় নেন। ৯৮ বলে ৫১ রান করে লিস্কের বল ডাউন দ্যা উইকেটে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন সোলের হাতে। পরের বলে শিমরন হেটমেয়ারকেও (৪) ফিরিয়ে দেন লিস্ক। দুই বলে দুই উইকেট শিকার করে চাপে ফেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।

ষষ্ঠ উইকেটে জেসন হোল্ডার এবং রোভম্যান পাওয়েল ২৩ রান যোগ করেন। দলীয় ১৫৮ রানের মাথায় ইভান্সের বল পুল করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন হোল্ডার (১২)। ১৫ রান করে পাওয়েল বোল্ড হন শরীফের বলে। ইনসাইড এজ হয়ে বল উড়িয়ে দেয় অফ স্টাম্প। বেরিংটনের বলে বিদায় নেন নার্স। এক স্লোয়ারে ব্র্যাথওয়েটকে পরাস্ত করেন বেন হুইল। শেষদিকে ২৫ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এর এক বল পরেই কিমো পলকে বোল্ড করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ইতি টানেন হুইল। মাত্র ১৯৮ রান করে গুটিয়ে যায় তারা।

১৯৯ রান তাড়া করলেই বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ যেন হাতছানি দিচ্ছিল স্কটল্যান্ডকে। অবশ্য শুরুটা তেমন ভালো হয়নি তাদের। ৬ রানের মাথাতেই কেমার রোচের বলে এভিন লুইসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান কাইল কোয়েটজার। এরপর আঘাত হানেন হোল্ডার। হোল্ডারের লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারি ম্যাথু ক্রসের ব্যাট স্পর্শ করে লাগে স্টাম্পে।

মাইকেল জোনস থিতু হলেও বড় স্কোর গড়তে পারেননি। ১৪ বলে ১৪ রান করে রোচের বাউন্সার হুক করে ক্যাচ দেন পাওয়েলের হাতে। ২৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে স্কটল্যান্ড।

চতুর্থ উইকেটের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় স্কটল্যান্ড। বেরিংটন ও ম্যাকলয়েড মিলে যোগ করেন ৪২ রান। তাদের ব্যাটে বিপর্যয় কিছুটা সামাল দেয় স্কটিশরা। ৫০ বলে ২১ রান করা ম্যাকলয়েডকে ফেরান নার্স। নিজের বলে নিজেই এক দারুণ ক্যাচ নেন অ্যাশলে নার্স।

এরপর বেরিংটনকে সাথে নিয়ে হাল ধরেন মুনসি। দুজন মিলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন। তাদের এ মাঝারি ছুটিতে জয়ের পথে এগিয়ে যায় স্কটল্যান্ড। দলীয় ১০৫ রানের মাথায় বেরিংটনকে এলবিডব্লিউ করেন শেখ নাসির। এরপর লিস্ককে সাথে নিয়ে এগিয়ে যান জর্জ মুনসি।

৩৫.২ ওভারের সময় বৃষ্টি এসে হানা দেয় মাঠে। তখন স্কটিশদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১২৫। জয় থেকে ৭৪ রান দূরে ছিল তারা। বৃষ্টির কারণে আর কোনো বল মাঠে না গড়ালে বৃষ্টি আইনে দেখা যায় ৫ রান পিছিয়ে রয়েছে স্কটিশরা। ফলে পাঁচ রানে ম্যাচ জিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ফলাফল : বৃষ্টি আইনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ রানে জয়ী।