ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। বিশ্বকাপ মানেই ফেভারিট ব্রাজিল। আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ কিংবা বাছাইপর্বের ফলাফলের দিকে তাকালেও খুব সুস্পষ্ট তা। চার বছর আগে ব্রাজিল বিশ্বকাপে যে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল গত সপ্তাহে সেই জার্মানিকেই ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছে তারা! বিশ্বকাপের আগে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের জন্য এটা মোটেও বড় কোন জয় নয়; তবে এই জয়টা যে ৭-১ গোলের হারের ‘ভূত’ থেকে ব্রাজিলকে বের করে নিয়ে এসেছে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
অতীত সাফল্য আর নিজেদের খেলার ধরণ এবার রাশিয়া বিশ্বকাপেও তার ব্যতিক্রম নয়। যার নেপথ্যে রয়েছেন তিতে। তার অধীনে বর্তমান ব্রাজিল দলটা অনেক বেশি শক্তিশালী, যথেষ্ট ধারাবাহিকও। যার প্রমাণ গত এক বছরেই দেখেছে গোটা ফুটবল দুনিয়া।
আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের আগেও তিতের অধীনে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে ব্রাজিল। ল্যাটিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে সবার আগেই বাছাই পর্বের বাঁধা পেরিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বের টিকিট নিশ্চিত করে সেলেসাওরা। পাঁচটি কারণে এবার রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিলকেই ফেভারিট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। নিচে সেগুলো নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :
একদম রক্ষণভাগ থেকেই ব্রাজিলকে গড়ে তুলেছেন তিতে। ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ায় অধিনায়কত্ব হারাতে হয়েছিল থিয়াগো সিলভার। সেবার বরখাস্ত হওয়া কার্লোস দুঙ্গার উত্তরসূরী হিসেবে নিয়োগ পেয়ে সেই সিলভাকে দিয়েই আত্মবিশ্বাস ফেরানোর কাজটা করেন তিতে। তার সৌজন্যেই সেন্টার হাফে মিরান্ডা কিংবা মারকুইনহোসের সঙ্গে থিয়াগো সিলভাকেই বর্তমান বিশ্বের সেরা জুটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ব্রাজিলের গোলরক্ষককে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তাদের ঠিক সামনেই রয়েছেন ক্যাসেমিরো এবং পাউলিনহো। একটু পরিসংখ্যান ঘাটলেই দেখা যাবে তাদের সাফল্য। তাদের নিয়ে খেলা শেষ ১৯ ম্যাচে মাত্র পাঁচটি গোল হজম করেছে ব্রাজিল আর প্রতিপক্ষের জালে সেলেসাওরা বল জড়িয়েছেন ৩৯ বার।
এই মুহূর্তে বিশ্বমানের গোলরক্ষক রয়েছে ব্রাজিলের। ২৫ বছর বয়সী অ্যালিসন বেকার ইতোমধ্যেই নিজের জাত ছিনিয়েছেন। ব্রাজিলের এই গোলরক্ষক ইতালিয়ান সিরি’এ লিগের দল রোমার হয়ে অসাধারণ খেলছেন। তার পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে দলে ভেড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে লিভারপুল এবং রিয়াল মাদ্রিদও।
বর্তমান ব্রাজিলের সেরা তারকা নেইমার। সেলেসাওদের অধিনায়কও। কিন্তু ব্রাজিল দলে নেইমারই কেবল বিশ্বমাপের খেলোয়াড় নয়। পিএসজির এই তারকা ফুটবলার ছাড়াও ব্রাজিলের রয়েছে ফিলিপে কোটিনহো, উইলিয়ান কিংবা ডগলাস কোস্তার মতো তারকা ফুটবলার।
ব্রাজিলের আগের দুই কোচের চেয়ে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বিচারে তিতে অনন্য। খেলোয়াড়দের সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক তার। গণমাধ্যমের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেন তিনি। তার অধীনে সকলেই নিজের সেরাটা ঢেলে দিতে মরিয়া। দুঙ্গার উত্তরসূরী হিসেবে ব্রাজিলের ভার কাঁধে নেয়ার পর থেকে কোন ধরনের বিতর্ক ছুঁতে পারেনি তাকে! ব্রাজিলের খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের প্রত্যেকেই ভালোবাসেন এবং সম্মান করেন তিতেকে।