ভাই, প্লিজ আজকে খেলতে দিন : আশরাফুল

প্রথম ম্যাচে কোন রানই পাননি। দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র ১৪ রান করেছিলেন। তৃতীয় ম্যাচে তো আরো খারাপ, ৭৫টি বল খেলে করেছিলেন ২৫ রান। তবে চতুর্থ ম্যাচে ফিরেন ঠিক ভাবেই। করেন সেঞ্চুরী। তবে সেঞ্চুরী করেও দলকে জেতাতে পারেনি আশরাফুল।

তবে আশরাফুলের অমন সেঞ্চুরির পর অতিবড় তার বিরোধিও চুপ মেরে যান। সবার মনে হয়, নাহ্ এখনো ফুরিয়ে যাননি এ নন্দিত-নিন্দিত ক্রিকেটার। ব্যাটে আগের সেই তেজ আর বাহারি মারের তোড় না থাকলেও ব্যাকরণ মেনে বলের মেধা ও গুণ বিচার করে লম্বা ইনিংস খেলার সামর্থ্যটা আছে আগের মতই।

কিন্তু বিধি বাম, যখনই অমন ভাবনা শুরু, তখনই আবার অতলে তলিয়ে যাওয়া। এরপর টানা ব্যর্থ আশরাফুল। পরপর তিন ম্যাচে তার রান হল (৮+০+০)। যার কারনে ক্ষুব্ধ কলাবাগান কর্মকর্তারা।

কোচ জালাল আহমেদ চৌধুরী তো ফোনই করে বসেন আশরাফুলকে, ‘আশরাফুল শোন, পর পর তিন ম্যাচে রান নেই। তোর এখন একটু ব্রেক দরকার। তুই কাল না খেললি। আমরা তোকে ড্রপ দেয়ার কথা ভাবছি। একটি ম্যাচ বাইরে থাক।

কোচের এমন ফোনে যেন সম্বিৎ ফিরে পাওয়া। তবে কি আমার এবারের লিগ শেষ? আমি কি শেষ পর্যন্ত একাদশের বাইরে চলে যাচ্ছি? এই ভেবে ভেবে আধো ঘুম আধো জাগা অবস্থায় রাত পার করা। সকালে খেলা শুরুর আগে বিকেএসপি মাঠে গিয়ে কর্মকর্তাদের কাছে অনুনয় বিননয়! ‘ভাই প্লিজ আমাকে ড্রপ দিয়েন না। আর একটি ম্যাচ সুযোগ দেয়া যায় না? আমাকে কাইন্ডলি আজকের ম্যাচটি খেলতে দিন। আজ ব্যর্থ হলেই ড্রপ করে দিয়েন। প্লিজ আজ খেলতে দিন। শুধু এই ম্যাচটি খেলতে চাই। এদিন রান করতে না পারলে আর খেলানোর অনুরোধ করবো না।’

এমন বলে কয়ে মাঠে নামা। আর খেলতে নেমেই বাজিমাৎ। তার দায়িত্বপূর্ণ শতকেই অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে ম্যাচ জিতেছে কলাবাগান। লক্ষ্য কম ছিল না। জিততে দরকার ছিল ২৫৩। তরুণ ওপেনার তাসামুল হক সেঞ্চুরি সহ ৯২.১৭ স্ট্রাইকরেটে ১১৫ বলে ১০৬ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস উপহার দিলে জয়ের ভীত গড়ে ওঠে। আর তিন নম্বরে নামা আশরাফুল দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একদিক আগলে রাখার কাজটি করে ১৩৬ বলে ১০ বাউন্ডারিতে ১০২ রানের হার না মানা ইনিংস উপহার দেন। তাতেই আট বল আগে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কলাবাগান।

কলাবাগান কোচ জালাল আহমেদ চৌধুরী অবশ্য বিষয়টাকে অন্যভাবে দেখতে চাচ্ছেন। তার কথা আমি চাই আশরাফুলের সেরাটা বের করতে। আমি বিশ্বাস করি এখনো সে ফুরিয়ে যায়নি। কিন্তু শেষ তিন ম্যাচে চরম ব্যর্থ আশরাফুলকে রানে ফেরাতেই এ ম্যাচে ড্রপ দেয়ার ভয় দেখিয়েছিলাম। মাঠে তার খেলার আকুতি দেখে বলেছিলাম তুই ফ্রি হয়ে খেল।