যেভাবে ধরা পড়ল স্মিথ-ব্যানক্রফ্ট-ওয়ার্নারদের জোচ্চুরি

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের ‘জালিয়াতি’র খবরে উত্তাল গোটা বিশ্ব। আইসিসির পাশাপাশি দেশের ক্রিকেট সংস্থা থেকেও চরম শাস্তি পেয়েছেন অভিযুক্ত তিন অজি ক্রিকেটার— স্টিভ স্মিথ, ক্যামেরন ব্যানক্রফ্ট এবং ডেভিড ওয়ার্নার। ভারতীয় বোর্ডের তরফেও আইপিএল-এ খেলার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু কীভাবে ক্যামেরায় অস্ট্রেলীয়দের ‘জোচ্চুরি’ ধরা পড়ল? দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন পেসার ফ্যানি ডিভিলিয়ার্সের দাবি, তিনিই নাকি ধরিয়ে দিয়েছেন অজি ক্রিকেটারদের ‘কুকর্ম’।

নব্বইয়ের দশকে বেশ নামকরা পেসার ছিলেন ফ্যানি ডিভিলিয়ার্স। বর্তমানে তিনি ধারাভাষ্যকারের কাজ করেন একটি সম্প্রচার সংস্থায়। ফ্যানির সংস্থাই ঘটনাচক্রে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের সম্প্রচারের ভূমিকায়। ডিভিলিয়ার্সের দাবি, তিনিই নাকি ক্যামেরাম্যানকে বলেছিলেন বলের দিকে নজর রাখতে। আসলে যে সময় ক্যামেরা ফলো করে ব্যানক্রফ্টের দিকে, সেই সময়েই ভালমতো রিভার্স সুইং করাচ্ছিলেন অস্ট্রেলীয় পেসাররা।

তাই সন্দেহ জাগে ফ্যানি ডিভিলিয়ার্সের। তিনিই তখন ক্যামেরাম্যানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলের প্রতি সজাগ নজর রাখতে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ডিভিলিয়ার্সের সন্দেহই সত্যি হয়েছে। ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ব্যানক্রফ্টের পকেট থেকে হলুদ টেপ বের করে বলে বিকৃতি ঘটানোর মতো ঘটনা। তার পরেই তোলপাড় ক্রিকেট বিশ্ব।
স্থানীয় এক রেডিওয় ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ডিভিলিয়ার্স পরে বলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা যদি ২৬, ২৭ কিংবা ২৮-তম ওভারে রিভার্স সুইং পায়, তাহলে ধরতে হবে কিছু একটা সমস্যা রয়েছে।’’ ক্যামেরাম্যানদের তিনি বলেছিলেন, “যাও, একটু নজর রাখো। ওরা বোধহয়, কিছু একটা ব্যবহার করছে।”

কেন রিভার্স সুইং সেই সময়ে অস্বাভাবিক, তার-ও ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি, ‘‘যে উইকেটে ঘাস রয়েছে, সেই উইকেটে বলের অবস্থা খুব একটা পরিবর্তন হবে না। পাকিস্তানের উইকেটে এমনটা সম্ভব। কারণ, সেখানে প্রতিটি সেন্টিমিটার থাকে এবড়োখেবড়ো।’’ এর পরে ফ্যানি ডিভিলিয়ার্স আরও বলেন, ‘‘ঘাসে ঢাকা উইকেটে বলের আকৃতি, এক পাশের মসৃণতায় পরিবর্তন আনতে করতে অন্য কিছু করতেই হবে। অস্ট্রেলীয়রা ৩০ ওভারের মধ্যেই রিভার্স সুইং পেল। এর অর্থ পরিষ্কার, তারা কিছু একটা করেছে।’’

ছদ্মবেশ নেওয়া সাংবাদিকের গোপন ক্যামেরায় বেআব্রু হয়ে গিয়েছিলেন মহম্মদ আসিফ, মহম্মদ আমের এবং সলমন বাট। স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে তিন পাক তারকাই নির্বাসিত হয়েছিলেন। এবার অনেকটা সেই রকম ভঙ্গিতেই ফাঁস হয়ে গেল স্মিথ, ওয়ার্নারদের ‘কীর্তি’। যাই হোক, ১৯৯৩-৯৪ সালে ডিভিলিয়ার্স সিডনিতে দশ উইকেট নিয়ে তারকাখচিত অস্ট্রেলিয়াকে ধাক্কা দিয়েছিলেন। সাম্প্রতিককালে প্রাক্তন পেসার অজিদের যে ধাক্কা দিলেন, তার হ্যাংওভার কিন্তু বেশ কিছুদিন থাকবে।