যে কারণে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ!

ভারতীয় সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) পরীক্ষায় আধিপত্য ছিল ব্রিটিশদের। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় ভারতীয়দের জন্য চালু করা হয় কোটা পদ্ধতি। সেই থেকে শুরু। ভারতীয়দের মধ্যে আলাদা কোটা পদ্ধতির সুযোগ পায় সংখ্যালঘু মুসলমানরা।

পাকিস্তান আমলে বর্তমান বাংলাদেশের দাবির মুখে কেন্দ্রীয় সুপিরিয়র সার্ভিসগুলোর কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রদেশভিত্তিক কিছু কোটা চালু করা হয়।বাংলদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তৎকালীন সংস্থাপন সচিবের এক নির্বাহী আদেশে কোটা পদ্ধতি বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। একই সময় এক আদেশে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হয়। চাকরিতে তাদের প্রবেশের বয়স করা হয় ৩২ বছর।১৯৭২ সালে ২০ শতাংশ মেধা, ৪০ শতাংশ জেলা, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা আর ১০ শতাংশ যুদ্ধবিধ্বস্ত নারী কোটা ছিল।

১৯৭৬-এ তা পরিবর্তন করে মেধা ৪০ শতাংশ আর জেলা কোটা ২০ শতাংশ করা হয়। ৩২ বছর বয়স নির্ধারিত থাকায় বেশিরভাগ সময় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পদ খালি থাকে। আর সংরক্ষিত হওয়ার কারণে এ পদগুলোতে মেধাভিত্তিক নিয়োগও সম্ভব হয় না। ফলে ১৯৭৭ সালে তৎকালীন পে ও সার্ভিস কমিশনের একজন সদস্য বাদে সবাই সরকারি নিয়োগে কোটাব্যবস্থার বিরোধিতা করেন। কোটার পক্ষে অবস্থা নেওয়া এম এম জামান প্রচলিত কোটাগুলো প্রথম ১০ বছর বহাল রেখে ১৯৮৭ সাল থেকে পরবর্তী ১০ বছরে ধীরে ধীরে কমিয়ে দশম বছরে তা বিলুপ্ত করার পক্ষে মত দেন।

কিন্তু ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর এই কোটা মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্যও দেওয়া হয়। গত ২০ বছর যদি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিয়োগ হতো, তবে এখন আর মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রয়োজন থাকতো না৷ মূলত বঞ্চিতদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতেই ৩০ শতাংশ কোটা অব্যাহত রাখা হয়। ১৯৯৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত-এই ২০ বছরেও সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায়নি! যার কারণে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুযোগ সন্তানদের ছাড়িয়ে নাতি-নাতনিদেরও দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।