রাবাদার শাস্তি তুলে নিল আইসিসি, চলল নতুন বিতর্ক

নিউল্যান্ডস টেস্টে বল হাতে দৌড় শুরু করার ছাড়পত্র পেয়ে গেলেন কাগিসো রাবাডা। গত কয়েক সপ্তাহের যাবতীয় নাটকের পরে দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনের ভিত্তিতে আইসিসি তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল। মঙ্গলবার শুনানি শেষে আইসিসি-র তরফে বলা হয়েছে, রাবাডার ওপর থেকে নির্বাসনের শাস্তি তুলে নেওয়া হচ্ছে। যার ফলে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের শেষ দু’টো টেস্টে তিনি খেলতে পারবেন। কেপ টাউনে তৃতীয় টেস্ট শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার থেকে।
কিন্তু সত্যিই কি রাবাডা নাটকের যবনিকা পড়ল? নতুন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এই রায়ের পরে। আইসিসি ঠিক করল না ভুল? এই রায়ের পরে মাঠের বাইরে নতুন এক দ্বৈরথ শুরু হয়ে গিয়েছে। যেখানে জড়িয়ে পড়েছেন দু’দেশের সাংবাদিকরাও।

দক্ষিণ আফ্রিকার এক প্রবীণ সাংবাদিক এবং ভাষ্যকার জানিয়েছেন, ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো প্রাথমিক ভাবে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন, তাতে রাবাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ— দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তা বদলে যায়। তিনি বলেছেন, ‘‘ক্রো যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, তাতে বলা হয়েছিল, ‘স্মিথ এবং রাবাডা ধাক্কাটা এড়াতেই পারতেন।’ কিন্তু যে রিপোর্ট আইসিসি মারফত প্রকাশিত হয়েছে, তাতে লেখা, ‘রাবাডা ওই অবাঞ্ছিত ধাক্কাটা এড়াতে পারতেন।’ মানে দায়টা শুধুই দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারের ওপর এসে পড়ে।’’

এর পাল্টা মত ভেসে আসছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। সে দেশের এক বর্ষীয়ান সাংবাদিক টিভি চ্যানেলে বলেছেন, ‘‘আমি স্তম্ভিত। আইসিসি-র এই সিদ্ধান্তে ক্রিকেটের আইনকানুন স্রেফ প্রহসনে পরিণত হল।’’
স্মিথ-কে ইচ্ছাকৃত ভাবে ধাক্কা মারার অভিযোগে দু’টেস্টের জন্য নির্বাসিত হয়েছিলেন রাবাডা। ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো-র যে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ছ’ঘণ্টা ধরে রাবাডার আবেদন শোনেন আইসিসি নিযুক্ত কমিশনার মাইকেল হেরন। যেখানে রাবাডার প্রতিনিধি ছিলেন আইনজীবী ডালি এমপফু। শুনানি শেষে কমিশনার রায় দেন, রাবাডা ইচ্ছাকৃত ভাবে স্মিথ-কে ধাক্কা মারেননি। ফলে রাবাডার পাওয়া ডিমেরিট পয়েন্ট কমে যায় এবং নির্বাসনের শাস্তিও উঠে যায়। শুধু জরিমানা করা হয়েছে তাঁকে। ঠিক একই রকম ভাবে ম্যাচ রেফারি ক্লাইভ লয়েড শাস্তি দেওয়ার পরে আইসিসি-র কাছে আবেদন করে তৎকালীন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-কে মুক্ত করে এনেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।

বুধবার সাংবাদিকদের সামনে এসে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ ওটিস গিবসন বলে যান, ‘‘রাবাডা ইচ্ছাকৃত ভাবে কিছু করেনি। তবে উইকেট পাওয়ার পরে উৎসব করার ব্যাপারে ওকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।’’ অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার নাথন লায়নের বক্তব্য, ‘‘আমরা আইসিসি-র সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। অস্ট্রেলিয়া সব সময় সেরা ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে খেলতে চায়। আর রাবাডা তো বিশ্বের সেরা বোলার। তাই আমরাও ওর বিরুদ্ধে খেলতে মুখিয়ে আছি।’’