শত্রুর শত্রু যখন পরম বন্ধু হয়!

‘শত্রুর শত্রু পরম বন্ধু’ – নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে এই প্রবাদটার আক্ষরিক মিলই যেন খুঁজে পাওয়া গেল!

কদিন আগেও শ্রীলঙ্কার দর্শকরা ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে বোতল ছুঁড়ে মেরেছিল। ভারতীয় ক্রিকেটারদের বিষোদগার করতেও ছাড়েনি। অথচ একটি ম্যাচকে কেন্দ্র করে পালটে গেল যেন পুরো দৃশ্যপটই। নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে সেই শ্রীলঙ্কার দর্শকরাই গলা ফাটালেন ভারতের হয়ে। ভাবখানা এমন, যেন বাংলাদেশ হারলেই জিতে যাবে শ্রীলঙ্কা!

কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নিদাহাস ট্রফির ‘সেমিফাইনালে’ রূপ নেওয়া শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ ম্যাচে আম্পায়ারের ‘নো’ বল না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক, উত্তেজনা, দুদলের ক্রিকেটারদের মধ্যে হট্টগোল, ম্যাচ বয়কটের সিদ্ধান্ত, বাংলাদেশের মহাকাব্যিক জয়ে ঘরের মাঠে দর্শকে পরিণত হওয়া- কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি লঙ্কানরা। লঙ্কানরা এতটাই ক্ষুব্ধ যে, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অভিভাবক হিসেবে পরিচিত জগমোহন ডালমিয়া যিনি ২০১৫ সালে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন তাকেও খোঁচা দিতে ছাড়েনি।

যদিও সেদিন শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করার পর বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান লঙ্কান সমর্থকদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছিলেন। বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কা তাদের বন্ধু। একই সঙ্গে বাংলাদেশ অধিনায়ক আশাও প্রকাশ করেছিলেন, ফাইনালে তারা লঙ্কান সমর্থকদের সমর্থন পাবেন। কিন্তু শিরোপা জেতার মঞ্চে লঙ্কানদের পুরো সমর্থন ছিল ভারতের দিকেই। বলা যায়, কায়মনোবাক্যে তারা বাংলাদেশের হারই কামনা করছিলেন।

প্রেমাদাসার গ্যালারিতে রোহিত শর্মা-দীনেশ কার্তিকদের নামে যে ভাবে রব উঠেছিল, তাতে মনে হচ্ছিল ভারত যেন ইডেন গার্ডেনে খেলছে। অন্যদেশে নিজেদের দেশের মতো করে আকুণ্ঠ সমর্থন পাওয়ায় ম্যাচ শেষে লঙ্কান দর্শকদের তাই ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

শিরোপার মঞ্চে লঙ্কানদের পুরো সমর্থন জানানোয় লঙ্কান দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ভারতীয় অধিনায়ক বলেন, ‘এত মানুষ মাঠে এসেছে, বিষয়টা দারুণ। আরও চমৎকার বিষয়, শ্রীলঙ্কার এই সমর্থকরা সবাই আমাদের সমর্থন দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা হলে চিত্রটা পাল্টে যেত কিন্তু আজ এভাবে সমর্থন দেওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ।’
প্রিয়