স্বামী অক্ষম, ছেলেকে বিষ খাইয়ে আত্মঘাতী মা

শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে না পারাকে কেন্দ্র করেই সম্পর্কে চিড়। এনিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। শনিবার রাতেও দু’জনের মধ্যে চরম অশান্তি হয়। এরপর রবিবার সকালে তিন বছরের শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে আত্মহত্যা করেন বধূ। স্ত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন জলপাইগুড়ির রায়পুর চা বাগানের শ্রমিক বিনোদ চিক বরাইক (৩০)। বর্তমানে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে তিন বছরের প্রতিবন্ধী শিশুপুত্র। গোটা ঘটনার জন্য নিজেকেই দায়ী করছেন বিনোদ। ঘটনায় কোনও পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের না হলেও আলাদা করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সোমবার বিকেলে বধূর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

জানা গিয়েছে, সাতবছর আগে সুলেখা চিক বরাইক (২৮) এর সঙ্গে বিয়ে হয় রায়পুর বাগানের গুদাম লাইনের বাসিন্দা বিনোদ চিক বরাইকের। ছয় এবং তিন বছরের দুই পুত্রসন্তানও রয়েছে তাঁদের। বিনোদ পুলিশকে জানায়, বছর দু’য়েক আগে ধীরেধীরে শারীরিক ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় তার। চিকিৎসা করার কথা ভেবেও লোকজ্জায় আর ভয়ে তা তা হয়ে ওঠেনি। এর ওর মুখ থেকে শুনে সক্ষমতা বাড়াবার চেষ্টা করলেও তাতে শরীর সাড়া দিচ্ছিলনা। ফলে দিনের পর দিন স্ত্রী সঙ্গে স্ত্রীর ক্রমশ দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল। এনিয়ে প্রায়ই দু’জনের মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। এমনকী, মারামারিও হত। ঘরের অশান্তি পৌঁছেছিল গ্রাম পঞ্চায়েত পর্যন্ত।

কিন্তু রায়পুরের পঞ্চায়েত সদস্য তথা পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, প্রধান হেমব্রম জানান, প্রতিদিনের অশান্তি মারামারির ঘটনার পিছনের কারণ কী ছিল তা তাঁর কাছে অজানাই ছিল এতদিন। শনিবারও এনিয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তি হয়। এরপর রবিবারই প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে স্ত্রী বিষ পানের মতো চরম ঘটনা ঘটিয়ে ফেলার পর মানসিকভাবে ভেঙে পরে নিজের শারীরিক অক্ষমতার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করে বিনোদ নিজেই।প্রধান হেমব্রম আরও বলেন, “লোকলজ্জায় ঘটনা চেপে না রাখলেই হয়ত এদিন দেখতে হত না। মৃত্যু হয়েছে সুলেখার। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে তিন বছরের শিশু সন্তান।”