সৎকারের একদিন পর মৃত ব্যক্তি ফিরে এল বাড়িতে!

শুক্রবার গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। পুলিশ দেহটি উদ্ধারের পর তা শনাক্তও করেছিল পরিবার। নিয়মমাফিক ময়নাতদন্তের পর সৎকারও হয়েছিল। কিন্তু শনিবার বদলে গেল ছবিটা। ‘মৃত’ ব্যক্তিকে দেখা গেল বাড়ির পাশে। মালবাজারের ক্রান্তি এলাকার এই ঘটনায় একেবারে থ স্থানীয় বাসিন্দারা।

যাঁকে নিয়ে এত কাণ্ড তাঁর নাম গিরেন রায়। শনিবার সকালে ক্রান্তি এলাকায় স্থানীয়রা তথাকথিত ‘মৃত’ মানুষটিকে স্থানীয় ওদলাবাড়ি বাজারে ঘুরতে দেখেন। কারও যেন মনে হয় ভূত দেখছেন, কেউ ভাবছিলেন চোখের ভুল। যে ব্যক্তিকে শুক্রবার রাতে শ্মশানঘাটে জ্বালিয়ে সৎকার করা হল সেই মানুষটি এভাবে চোখের সামনে জলজ্যান্ত দেখতে পেয়ে হইহই পড়ে যায়। স্থানীয়দের মধ্যে কয়েকজন ভয় কাটিয়ে ওই ব্যক্তির কাছে এগিয়ে যান। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নিজের বাড়িতে। বাড়িতে আনা মাত্রই ছেলে সঞ্জিৎ, বিশ্বজিৎ-সহ বাড়ির লোকেরা একেবারে ঘাবড়ে যান। শেষ পর্যন্ত সবাই একমত হন ওই ব্যক্তি তাঁদের ‘প্রয়াত’ বাবা গিরেন রায়। তাহলে শুক্রবার রাতে যাঁর মুখাগ্নি করা হল তিনি কে? এই নিয়ে উঠতে থাকে নানা প্রশ্ন। দুই ছেলে এবং পরিবারের লোকজনও এই ঘটনায় ধোঁয়াশায় রয়েছেন।

শনিবার সকালে এই খবর জানাজানি হতে গিরেন রায়কে দেখতে ভিড় জমে যায়। ক্রান্তির রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ হাঁসখালি গ্রামে দিনভর শুধু গিরেন রায়কে নিয়ে আলোচনা। চলে আসে ক্রান্তি ফাঁড়ির পুলিশও। এলাকার মানুষ এবং পরিবারের সদস্যরা এক বাক্যে বলছেন দু’জনের চেহারা একইরকম। দুই ছেলে বাবার মৃত্যু জেনে তিন দিন নিয়ম অনুয়ায়ী কাজও শুরু করেছেন। সঞ্জিতদের বক্তব্য, তাঁদের বাবা গত ৪ বছর ধরে সব কিছু ভুলে যাচ্ছেন। কখনও বাড়িতে থাকেন, আবার নিজের মর্জি মতো বাইরে চলে যান।

এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সুজিত কুমার ঘোষ বলেন, দুজনের চেহারার এতটাই মিল যে বোঝা মুশকিল হয়ে পড়েছিল। প্রতিবেশী মতিয়ার রহমানের কথায়, গোটাটাই অবিশ্বাস্য। এমন যে কোনওদিন হতে পারে তা তিনি কল্পনা করতে পারছেন না। কারণ মতিয়ার স্বচক্ষে মানুষটিকে দেখেছেন। শুক্রবার পর্যন্ত তিনি জানতেন মৃত ব্যক্তিই গিরেন রায়। ক্রান্তি ফাঁড়ির পুলিশ মৃতের পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছে।