৫০ রানে ১০ উইকেট নেই অস্ট্রেলিয়ার

বল টেম্পারিং বিতর্কে এই মুহূর্তে টালমাটাল অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট। এই দুঃস্বপ্নের মাঝে বিশাল এক হার সঙ্গী করল অস্ট্রেলিয়া দল। কেপ টাউন টেস্টে চার দিনেই সফরকারীদের ৩২২ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

৪৩০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় আজ চতুর্থ দিনের চা বিরতির আগে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ৪৭। পরের সেশনে ২৩ ওভারেই শেষ অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। বিনা উইকেটে ৫৭ থেকে ১০৭ রানেই অলআউট হয়ে গেছে অসিরা। মানে ৫০ রানেই হারিয়েছে ১০ উইকেট!

তিন দিন আগে অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৫৮ রানে অলআউট হয়েছিল ইংল্যান্ড। এবার টেস্টের আরেক অভিজাত দল অস্ট্রেলিয়া অলআউট হলো ১০৭ রানে! ইংল্যান্ড কিছুটা সান্ত্বনা পেতেই পারে!

দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস গুঁড়িয়ে দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার মরনে মরকেল।

এই জয়ে চার ম্যাচ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। আগামী ৩০ মার্চ জোহানেসবার্গে শুরু হবে শেষ টেস্ট।

অস্ট্রেলিয়ার ধ্বংসযজ্ঞের শুরুটা চা বিরতির পর বল টেম্পারিংয়ের চেষ্টা করা ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে দিয়ে। স্পিনার কেশব মহারাজের বল কাভারে ঠেলে সিঙ্গেল নিতে চেয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। সরাসরি থ্রোয়ে স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভেঙে দেন ফাফ ডু প্লেসি। ব্যানক্রফট রান আউট ২৬ রান করে। বেশিক্ষণ টেকেননি ওয়ার্নারও। কাগিসো রাবাদার বলে তৃতীয় স্লিপে এবি ডি ভিলিয়ার্সকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান (৩২)।

পরের ওভারে মহারাজ পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন। স্লিপে ডি ভিলিয়ার্সকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন উসমান খাজা। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে এইডেন মার্করামের এক হাতে নেওয়া দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরেন শন মার্শ। স্কোর ৫৯ রেখেই অস্ট্রেলিয়া হারায় ৩ উইকেট!

এক মার্শের বিদায়ে নামেন আরেক মার্শ, মিচেল। মহারাজের হ্যাটট্রিক বলটা ঠেকিয়ে দেন ছোট মার্শ। বল টেম্পারিংয়ের ঘটনায় এক টেস্ট নিষিদ্ধ হওয়া অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ মার্শকে নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন।

কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসেই স্মিথকে ফেরান মরনে মরকেল। উইকেটটা একদম প্রথম ইনিংসের ‘কার্বন কপি’। আবারো গালিতে ডিন এলগারের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক (৭)। প্রথম ২০ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৭ রান তোলা অস্ট্রেলিয়া পরের ১৩.২ ওভারে ২৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে একশর আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কায় তখন।

এক ওভার পর এসে পরপর দুই বলে দুই উইকেট নেন মরকেলও। প্রথমে তৃতীয় স্লিপে ডি ভিলিয়ার্সকে ক্যাচ দেন মিচেল মার্শ (১৬)। পরের বলে ডাক মেরে ফেরেন প্যাট কামিন্স। তবে মহারাজের মতো হ্যাটট্রিক হয়নি মরকেলেরও।

স্কোর ৯৪ রেখে মিচেল স্টার্ক ও নাথান লায়নের বিদায়ে অস্ট্রেলিয়ার একশর আগে অলআউট হওয়ার শঙ্কাটা আরো ঘনীভূত হয়েছিল। সেই ৯৪ রানেই অলআউট হতে পারত তারা। মহারাজের বলে পেইনকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু পেইন রিভিউ নিলে পাল্টায় সিদ্ধান্ত। পরের ওভারেই জশ হ্যাজেলউডকে ফিল্যান্ডারের ক্যাচ বানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস গুটিয়ে দেন ম্যাচসেরা হওয়া মরকেল।

এর আগে তৃতীয় দিনের ৫ উইকেটে ২৩৮ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের দিনই ফিফটি করা ডি ভিলিয়ার্স ফেরেন ৬৩ রানে। কুইন্টন ডি ককের ৬৫ ও ফিল্যান্ডারের অপরাজিত ৫২ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হয় ৩৭৩ রানে। তাতে অস্ট্রেলিয়ার সামনে দাঁড়ায় চারশ ছাড়ানো পাহাড়সম লক্ষ্য। সেই রান পাহাড়ে চাপা পড়ল অস্ট্রেলিয়া।