৫ উইকেটের বিনিময়ে মাত্র ১৮ রান দিলেন রাবাদা

বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারে ধস নামান দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদা।

পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টে শুরুটা মন্দ ছিল না অস্ট্রেলিয়ার। ডেভিড ওয়ার্নারের হাফ সেঞ্চুরিতে ভালোভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের জবাব দিচ্ছিলেন অসিরা। কিন্তু কাগিসো রাবাদার এক বোলিং স্পেলে এলোমেলো হয়ে যায় অসিরা। মুহূর্তেই অস্ট্রেলিয়ার অল্পরানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও তৈরি হয়।

মাত্র ১৮ বলে ৫ উইকেট নেন প্রোটিয়া পেসার রাবাদা। তাকে এ মুহূর্তে কেন সবথেকে ভয়ংকর বোলার বলা হয় তা আরেকবার প্রমাণ পেল ক্রিকেট বিশ্ব। ডানহাতি এ পেসারের ওই বোলিং স্পেলে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যান।

অথচ সকালের সেশনে তাকে কড়া শাসন করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনাররা। ১১ ওভারে মাত্র ২ মেডেনে দিয়েছিলেন ৪৮ রান। মধাহ্ন বিরতির পর দ্বিতীয় স্পেলের শুরুতেও স্বরূপে ফিরতে পারছিলেন না। প্রথম দুই ওভার ঢিলেঢালা বোলিং করলেও তৃতীয় ওভারে ডানহাতি এ পেসার ফিরে পান নিজেকে।

শুরুটা স্টিভেন স্মিথকে দিয়ে। দারুণ এক ইনসুইংয়ে বল আঘাত করে স্মিথের প্যাডে। আম্পায়ার রাবাদার আবেদনে সাড়া দিয়ে স্মিথকে সাজঘরের পথ দেখান। কিন্তু অসি অধিনায়ক খুশি নন আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে। স্মিথ রিভিউ চাইলেন শন মার্শের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু নষ্ট হয় তাদের রিভিউ। ওভারের শেষ বলে নিজের প্রথম উইকেট পেয়ে খুশিতে আত্মহারা ২২ বছর বয়সি এ পেসার।

পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে আবারও এলবিডব্লিউর আবেদন। এবার ব্যাটসম্যান শন মার্শ। ভেতরে ঢোকানো বলে ব্যাট মিস করেন মার্শ। এবারও আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত নেন। মার্শ রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। তিন বল পর নতুন ব্যাটসম্যান মিচেল মার্শ আউট হন উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে। মার্শের বিদায়ে চা-বিরতিতে যায় দুই দল। বিরতির পর প্রথম বলেই রাবাদার সাফল্য। প্যাট কামিন্স উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন ডি ককের হাতে।

পরের ওভারের প্রথম বলে হ্যাটট্রিক চান্স রাবাদার। কিন্তু ওই ওভারে কোনো উইকেট পাননি রাবাদা। পরের ওভারে পঞ্চম বলে স্টার্ককে আউট করে টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম পাঁচ উইকেটের স্বাদ পান। সোজা বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে বল মিস করে বোল্ড হন স্টার্ক।

স্মিথ চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫১.৬ ওভারে আউট হন। আর স্টার্ক অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ৫৭.৫ ওভারে। মাঝের সবকটি উইকেটই নেন রাবাদা। ২১ রানে ৫ উইকেট হারায় সফরকারীরা। তার বোলিং তোপে দুইশর আগেই গুটিয়ে যেত অস্ট্রেলিয়া।

শেষ দিকে দলের হাল ধরেন টিম পাইন। ৩৬ রান করেন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। এছাড়া নাথান লায়ন ১৭ ও হ্যাজেলউডের ব্যাট থেকে আসে ১০ রান। সব মিলিয়ে ২৪৩ রানে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন ডেভিড ওয়ার্নার। ৩৮ রান আসে আরেক ওপেনার ক্যামেরন ব্রেনক্রফটের ব্যাট থেকে।

রাবাদার ৫ উইকেটের পাশাপাশি ভেরর্নন ফিল্যান্ডার ২টি ও লুঙ্গি এন’গিডি ৩টি উইকেট নেন।

জবাবে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম দিন শেষে ১ উইকেটে ৩৯ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। আগের ম্যাচে দারুণ সেঞ্চুরি হাঁকানো মার্করাম সাজঘরে ফেরেন ১১ রানে। তাকে আউট করেন প্যাট কামিন্স। ডিন এলগার ১১ ও রাবাদা ১৭ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন । প্রথম ইনিংসে তারা পিছিয়ে ২০৪ রানে।