এই প্রেম কাহিনী সিনেমাকেও হার মানিয়েছে!

চট্টগ্রামে এসিড ছুড়ে তমাল চন্দ্র দে (২৫) নামে এক যুবকের দুই চোখ নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে গ্রেফতার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরা হলেন, সুমিত দত্ত (২৬) এবং মৌমিতা দত্ত অ্যানি (২৪)।

শুক্রবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর ভাটারা থানার ভাড়া বাসা থেকে এই দম্পতিকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার সকালে তাদের চট্টগ্রামে আনা হয়।

ডিবি পরিদর্শক রাজেশ কান্তি বড়ুয়া বলেন, তমালের সঙ্গে মৌমিতার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একই সময়ে মৌমিতা সুমিতের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়ায়। মৌমিতা ও সুমিত গোপনে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করে। বিষয়টি জানার পর তমাল মৌমিতাকে চড় মারে। এই চড়ের প্রতিশোধ নিতে তমালকে কৌশলে ডেকে নিয়ে মুখে এসিড মারে।

এসিড নিক্ষেপের ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নগরীর কোতয়ালী থানার রহমতগঞ্জে গুডস হিলের পাশে। ঘটনার পর ২৩ ফেব্রুয়ারি তমালের বাবা বাবুল চন্দ্র দে বাদি হয়ে মৌমিতা-সুমিত এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

তমালের বাবা বাবুল চন্দ্র দে চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের কর্মকর্তা।

অভিযুক্ত মৌমিতা দত্ত অ্যানি ও তার স্বামী সুমিত দত্ত উভয়ই প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। স্নাতক পাস তমালের দূর সম্পর্কের আত্মীয় মৌমিতা।

তমাল জানান, ২০১৫ সালে তমাল ও মৌমিতার মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক বছর পর তমাল জানতে পারে, সে সুমিতের সঙ্গে ৫ বছর ধরে প্রেম করে আসছে।

বিষয়টি শোনার পর তমাল মৌমিতাকে একটি রেস্টুরেন্টে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে মৌমিতা সুমিতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করে এবং তাদের কোর্ট ম্যারেজ হয়েছে বলেও জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মৌমিতাকে চড় মারেন তমাল। তখন মৌমিতার কান্না দেখে সুমিতকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয় তমাল।

এই ঘটনার মাসখানেক পর প্রজাপতির ডানা নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে বন্ধু হবার আমন্ত্রণ পান তমাল। নিয়মিত কথাবার্তার এক পর্যায়ে তাকে ওই আইডি থেকে তমালকে দেখা করার অনুরোধ করা হয়।

সাক্ষাতের জন্য তমাল রহমতগঞ্জে গুডস হিলের কাছে গেলে এক যুবক তার মুখে এসিড ছুড়ে মারে। তমালের দাবি, ওই যুবকই মৌমিতার স্বামী সুমিত।

এসিডে আক্রান্ত হয়ে তমালের এক চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। আরেকটি চোখও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া তার মুখমণ্ডলও বিকৃত হয়ে গেছে।

ডিবি পরিদর্শক রাজেশ সারাবাংলাকে জানান, ঘটনার পর সুমিত ও মৌমিতা গ্রেফতার এড়াতে ঢাকায় চলে যান। সেখানে মৌমিতা একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। সুমিত কয়েকটি টিউশন নেন। এভাবেই তাদের সংসার চলছিল।