নরসিংদীতে পুলিশের উপর হামলা এবং হ্যান্ডকাপসহ আসামী ছিনিয়ে নেওয়ায় ঘটনা ধামাচাপা দিচ্ছে পুলিশ

নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর মাধবদী থানার পুরানচর গ্রামের বাজার থেকে গত ২৮ জুন রোজ বৃহস্পতিবার আসর জমিয়ে মাদক (গাঁজা) খাওয়া এবং বিক্রির সময় সময় এক গাজাখোরকে আটক করে মোটা টাকা খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় এলাকাবাসী জানায় যে, মাদক বিক্রেতা একজনকে এসআই কামরুল আটক করে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে পুরানচর বাজারের বারেকের বাড়ির গেইটের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময়ে ঐ আসামীর সাথে পুলিশের টাকা নিয়ে রফাদফা হয়।

এক পর্যায়ে আলী মেম্বারের দোকানে এসে টাকার বিনিময়ে ঐ মাদক সেবনকারী আসামীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে উক্ত স্থানে আরেক মাদক সেবনকারী আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু পুলিশের এই টাকা খাওয়া দেখে এলাকার লোকজন জড়ো হয় এবং পুলিশের কাছ থেকে হ্যান্ডকাপ লাগানো আসামীকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

তারপর দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা রাগান্বিত হয়ে ঐ আসামীকে ধরতে গেলে এলাকার লোকজন মিলে পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে এলোপাথারী পিটুনী দিয়ে এলাকা থেকে বিতাড়িত করে। পরে ঐ সময় দায়িত্বে থাকা এস আই কামরুল সহ তার সঙ্গীরা হ্যান্ডকাপসহ আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দেয়।

এক পর্যায়ে হ্যান্ডকাপসহ আসামীকে ফিরে পেতে পুলিশ সদস্যরা রাগান্বিত হয়ে কঠোর পদক্ষেপ অবলম্বন করে আরো ১১ জন নিরীহ মানুষকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে ১১ জন আটককৃতদের স্বজনরা থানায় হাজির হলে পুলিশ তাদের নিকট হতে মোটা অংকের মুনাফা নিয়ে আসামীদের ছেড়ে দেয়।

এ বিষয়ে গন্যমাধ্যম কর্মী সাইফুল ইসলাম রুদ্র তার নিজের পরিচয় গোপন রেখে উক্ত হ্যান্ডকাপ সহ আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা সম্বন্ধে পাইকাচর ইউনিয়নের আলী মেম্বারের কাছ থেকে জানতে চাইলে, আলী মেম্বার উক্ত ঘটনার মূল রহস্য জানান। তিনি বলেন, গত ২৮ জুন রোজ বৃহস্পতিবার মাধবদী থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুরানচর বাজারে মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে প্রথমে একজন আসামী ধরলেও তাকে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পরে পুলিশ কর্মকর্তারা আরেক আসামী ধরতে যাওয়ার পর ঐ আসামীকে এলাকার কিছু লোকজন হ্যান্ডকাপ সহ ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং ঐ পুলিশ কর্মকর্তাদের উপর এলোপাথারী হামলা চালায়। পরে পুলিশ সদস্যরা রাগান্বিত হয়ে আরো বেশ কিছু নিরীহ মানুষকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

পরে আলী মেম্বার আরো জানান, তিনি হ্যান্ডকাপ উদ্ধার করে ঐ আটককৃত নিরীহ মানুষের স্বজনদের নিয়ে থানার হাজির হওয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে সহ সবাইকে মুসলেকা দিয়ে মোটা অংকের মুনাফার এবং আরো দশ জন আসামী ধরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটককৃত নিরীহ মানুষদের ছেড়ে দেয়। এসময় মেম্বার আরো বলেন, তাকেসহ সবাইকেই অপমান করে থানা থেকে বের করে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে গনমাধ্যম কর্মী সাইফুল ইসলাম রুদ্র, মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমাদের মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে উক্ত ঘটনা ঘটে। এ সমস্ত অনাঙ্খিত ঘটনার ফলে পুলিশের উপর থেকে সাধারণ মানুষের আস্থা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাই এখনি সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।