বালিয়াডাঙ্গীতে তাজা প্রাণ কেড়ে নিল শ্যামলী পরিবহন

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: সোমবার ২৫ জুন সকালে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনা, ঝড়ে গেল তাজা একটি প্রাণ। বাড়ীকে চলছে শোকের মাতম, তা দেখে নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না।

ঠাকুরগাঁও জেলা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ছোটপলাশবাড়ী গ্রামের নাজিরুলের ১ম কন্যা নাজমিন আক্তার (১৫) প্রতিদিনের ন্যায় প্রাইভেট পড়ার জন্য বাড়ী হতে বাইসাইকেল নিয়ে বের হয়ে কালমেঘ বারঢালী মোড়ে পৌছা মাত্র ঢাকা হতে আসা দ্রুতগামী শ্যামলী পরিবহন কোনকিছুর তোয়াক্কা না করে নাজমিনের উপর দিয়ে চালিয়ে দিয়ে কেড়ে নিল তাজা প্রাণ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে, সময় অনুমান সকাল ৮ টা কালমেঘ হতে সাইকেলে চড়ে বারঢালী মোড়ে নাজমিন প্রবেশ করার সাথে সাথে ঠাকুরগাঁও হতে আসা শ্যামলী পরিবহন ছুটে আসলে সাইকেল আরোহী নাজমিন নৈশ্য কোচের সামনে পড়লে প্রায় ১ শত গজ দূরে ফেলে পালিয়ে যায় নৈশ্য কোচ।

প্রত্যক্ষদর্শী সাথে সাথে পাগলু (থ্রি-হুইলার) গাড়ীতে করে বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মোস্তাফিজুর প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় এবং অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিকেল অফিসার মোরশেদ মাসুম বিল্লাহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

নাজমিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর নেওয়ার পথে রাস্তায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে তাকে আর রংপুর নেওয়া হলো না, লাশ হয়ে ফিরলেন বাড়ীতে। স্থানীয় ইউপি সদস্য (মহিলা) বিউটি আক্তার জানান নাজমিন খুবই সহজ সরল মেয়ে। তা বাবা একজন দরিদ্র কৃষক অভাবের সংসারের চার বোনের মধ্যে নাজমিন ছিল তার বড় মেয়ে।

এদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি রাজিউর রহমান চৌধুরী নাজমিনের বাড়ীতে এসে দেখা করেন, তিনি বলেন নাজমিনের মত মেধাবী ছাত্রীর মৃত্যু একটি করুণ দৃশ্য, তাকে আর আমরা পাব না। এভাবে অকালে তাজা প্রাণ ঝড়ে যাবে তা মেনে নেওয়ার মত না। আমি শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং আল্লাহ্ তাকে জান্নাত দান করুন, আমিন।

অপর দিকে নাজমিনের স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহিল বাকী জানান তারা দুইবোন আমাদের স্কুলের মেধাবী ছাত্রী। নাজমিনের সড়ক দূর্ঘটনায় আমরা মর্মাহত। তিনি আরো জানান, সড়কে চলাচল করা খুবই বিপদজনক হয়ে পড়েছে। যেমনি গাড়ী দ্রুত চলাচল করছে অপরদিকে কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে মহাসড়ক যেন চাতালে পরিনত হয়েছে।

শ্যামলী পরিবহনের অদক্ষ্য চালকের কারণে আজ আমার মেধাবী ছাত্রী প্রাণ হারালো। আমাদের কলেজের উদ্দ্যোগে মানববন্ধন মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে এর তদন্ত সহ বিচার দাবী জানাব। আর যেন নাজমিনের মত কারো প্রাণ ঝড়ে না যায়।