কর্ণফুলীতে ঝুঁকিপূর্ণ নয়াহাট সেতু, ২২ বছরেও কেউ দেখছেনা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সংলগ্ন শাখা খালের ওপর লোহার তৈরি নয়াহাট সেতুটি র্দীঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেতুটির রেলিং উন্মুক্ত লোহার দন্ড,ঝরাজীর্ণ পাটাতনের উপর দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ পার হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে।
দীর্ঘ ২২বছরেও রেলিংবিহীন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দেখেও কোন প্রকার সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কোন কর্তৃপক্ষ।

যদিও সব সরকারের আমলে আশ্বাস দিয়ে থাকেন বলে জানায় স্থানীয়রা। অনেকে এতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের আন্তরিকতার ও অভিযোগ তুলেছেন। যেন দেখার কেউ নেই। ফলে প্রতিদিনই নষ্ট পাটাতন ও রেলিংবিহীন ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে পারাপারের সময় দুঘর্টনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তাই এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ভরা বর্ষার আগেই দ্রুতগতিতে সংস্কারের দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা।

চরপাথরঘাটা পুরাতন ব্রিজঘাট থেকে মাত্র ৩৫ গজ দুরে এই সেতুটি অবস্থিত। এই সেতু দিয়ে চরপাথরঘাটা ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের ১৫ হাজার মানুষের চলাচল। এছাড়াও বিভিন্ন ছোট বড় ফ্যাক্টরী ও প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়ার একমাত্র সহজ পথ এই সেতুটি। নাহয় ২ কিঃমিঃ পথ অতিক্রম করে সৈন্যেরটেক পুল কিংবা ৪ কিঃমি পথ পাড়ি দিয়ে শাহ্ আমানত সেতুর পাশ্বর্বতী ১নং ওয়ার্ড হয়ে পশ্চিম চরপাথরঘাটা প্রবেশ করতে হয়। যা স্থানীয় মহিলা, ছাত্রছাত্রী ও রোগীদের পক্ষে সম্ভব নয়।

যদিও খুব অল্প সময়ে এই সেতু দিয়ে উপজেলার স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা (যা ছবিতে দৃশ্যমান রয়েছে)। এ ছাড়াও এই ঝুঁকিপূর্ণ লোহার সেতু দিয়ে জরুরী চিকিৎসা সেবাসহ একাধিক ফিশিং এন্টারপ্রাইজের মাছ বাজারজাত করেন ব্যবসায়ীরা। এলাকার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ এই কাঠের সেতুটির রেলিং সংযোজনসহ মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ ফরিদ জুয়েল নিজ উদ্যোগে এগিয়ে গেলেও একার পক্ষে এত বড় সেতু সংস্কার সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এলাকাবাসীর পক্ষে সাইফুদ্দীন, সেলিম খাঁন, মোঃ জাহাঙ্গীর জানান, এলাকাবাসীর কষ্ট দেখে ১৯৯৬ সালে প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী সিটি কর্পোঃ এর পক্ষ থেকে নয়াহাট লোহার সেতু, যাত্রীছাউনী, আইয়ুব বিবি স্কুল এন্ড কলেজ তৈরিতে এগিয়ে এসেছিলেন বলে জানান।

বর্তমানে সেতুটির অবস্থা খুব নাজুক। সেতুটি পুরাতন হওয়ায় মরিচা ধরে পাটাতন খুলে যাচ্ছে। এমনিতে সেতুর দুইপাশে রেলিং না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভয়ে ভয়ে সেতু পার হতে হয়। এখন প্রতিদিনেই বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে লোহার সেতুর পাটাতন খুব পিচ্ছিল হয়। অনেকে সেতু পারাপারের সময় পিছলে পড়ে আহত হয়। এই জনভোগান্তি আর দুর্দশা দেখার যেন কেউ নেই।

এই সেতুটি পূর্ণ সংস্কারের দাবী জানালেও ২২বছরেও এগিয়ে আসেনি কোন সরকার। এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফারুক চৌধুরী জানান, এলাকাবাসীর কষ্ট দূর করার জন্য দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সেতুটি নতুন তৈরীর বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয় অবগত রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, সেতুটির পাশে সর্তকীকরণ সাইন র্বোড টাঙানো বা লাল কাপড় ঝুলিয়ে রাখতে। উল্লেখ্য যে, ১৯৯৬ সালের ১৯শে ডিসেম্বর চরপাথরঘাটা মুক্ত বিহঙ্গ ক্লাবের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রয়াত মেয়র আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী চরপাথরঘাটা আসেন।

সে সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হলে আজকের নয়াহাট সেতু লোহার পাটাতন দিয়ে তৈরী করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
যা পরে ১৯৯৮ সালে তৈরি শুরু করে এবং ২০০০ সালের ২৯ জানুয়ারী উদ্বোধন করা হয়। এর পুর্বে ১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় তৈরি হয়েছিল কাঠের একটি সাকোঁ। যা দিয়ে কোন মতে মানুষ পারাপার হত।