চা বিক্রেতা থেকে কোটিপতি ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ ভারতে চা বিক্রেতার ছেলে প্রধান মন্ত্রী হলেও নওগাঁয় নিজেই চা বিক্রেতা থেকে কোটিপতি। নওগাঁর পোরশা উপজেলার গাঙ্গুরিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি,অনিয়ম ও অসদাচরণেরর অভিযোগ অত্র এলাকাবাসীর।

তার অনিয়মে অতিষ্ঠ হয়ে গতকাল বৃহঃবার এলাকাবাসী গাঙ্গুরিয়া ভূমি অফিস ঘেরাও করে এই অনিয়মের প্রতিবাদ ও এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার অপসারন দাবি করে।

পরিস্থিতি খারাপ পর্যায়ে যাওয়াতে পোরশা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমান (হাবিব) ফিরোজ মাহমুদ, সহকারী কমিশনার ভূমি ও পোরশা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন করলে, তিনি কিছুক্ষনের মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ শোনেন। একই উপজেলার নোনাহার গ্রামের আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তার জমি খাজনা বাবদ ৪৮০০/ টাকা নিয়ে ২৩২০/ টাকার খাজনার রশিদ দেন।

গাঙ্গুরিয়ার হাবিবুর বলেন, তিনি খাজনা কাটতে আসলে, অতিরিক্ত টাকা না দেওয়ায় তাকে অফিস থেকে বের করে দেন। এলাবাসীর অভিযোগ, তিনি সবসময় তোফাজ্জল নামের এক দালাল নিয়ে অফিসে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান এবং প্রকাশ্যে তোফাজ্জল তার টেবিলেই তার স্বাক্ষর করা খাজনা বহি থেকে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে খাজনার রশিদ সরবরাহ করেন।

আরো হাজারো অভিযোগ এলাকাবাসী এই দুর্নিতিবাজ চাকুরীজীবির বিরুদ্ধে।সাংবাদিকগন তাদেরর কোন তথ্যের জন্য তাকে ফোন করলে তাদেরও সঙ্গে খারাপ আচরন করেন। তোফাজ্জলের ব্যাপারে তারই সহকর্মী হাসিবুর রহমান বলেন, তার এখানে তিন মাস কর্মদিবসের মধ্যে প্রায় দুই মাস ছেলেটি এখানে এসেছে।

ইউএনও সকল অভিযোগ শুনে তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল ব্যাবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন ও তাকে উপস্থিত মৌখিকভাবে সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, আতাউরের বহিরাগত লোক নিয়ে অফিসে আসার ব্যাপারে আমি আগেও শুনেছি। ইউএনও এলাকাবাসীকে বলেন, এর পরে সে যদি কোন ঘুষ নেয়, অসদাচরণ করে এবং বহিরাগত লোক নিয়ে অফিসে আসে, আপনারা সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবেন।

সাপাহারের আশড়ন্দে আতাউরের নিজ গ্রামের লোক জনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলে, আতাউরের বাবা গিয়াস উদ্দীন ছিলো গ্রামের চা বিক্রেতা এবং আতাউরও তার বাবার সঙ্গে চা বিক্রি করতো কিন্তু ভূমি অফিসে চাকুরী পাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক।

নামে বেনামে অনেক জমি করেছে, সাপাহারে ফ্লাট, ট্রাক, অনেক বাগান ও বড় বড় পুকুর, দিঘী লীজ নেওয়া আছে। আতাউর বলেন, এই ভূমি অফিসে আসা তার প্রায় তিন মাস হচ্ছে, তার আগে সে বাকরইল ভূমি অফিস, পত্নীতলায় ৪৭দিন, তার আগে বহবল ভূমি অফিস, পত্নীতলায় তিন মাস চাকুরী করেছেন।

সব জায়গাতেই অনিয়মের কারনে সে স্থায়ী হতে পারেনী। তার আগে সে কৃষনপুর ভূমি অফিস,পত্নীতলায় দীর্ঘদিন থেকে সেখানে প্রায় তিনশত বিঘা সরকারী খাস জমি ব্যাক্তি মালিকানায় পত্তনী করে দেওয়ার অভিযোগ উঠে এবং এই বিশাল অনিয়মের জন্য দুর্নিতি দমন তার বিরুদ্ধে মামলা করে, তা এখনো চলমান রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বলেন, তার বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ কিন্তু তার অদৃশ্য বিশাল ক্ষমতার দাপটে সব কিছুতেই পার পেয়ে যান, তার জায়গায় আমরা হলে অনেক আগেই আমাদের চাকুরী চলে যেতো। গাঙ্গুরিয়ার ব্যাপারেও তার কিছুই হবেনা।