বাগেরহাটে সবজির পাইকার নেই বাম্পার ফলনেও কৃষক হতাশ

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট অফিস:বাগেরহাটের বাগেরহাটের ৯উপজেলা সবজির বাম্পার ফলন হলেও বাজারে সবজির ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হতাশায় ভূগছে বাগেরহাটের কৃষকেরা। কৃষকের মুখে হাসি নেই। আগামীতে এ চাষাবাদের আগ্রহ অনেকাংশে কমবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় অনেক কৃষকেরা।

বহু কষ্টে উৎপাদিত ফসলের হঠাৎ দরপতনে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। বর্তমানে এখানে দূর-দূরান্ত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক আসতে চায় না। বাইরের বড় বড় পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী বাজারে না থাকায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তবে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মধ্যস্বত্বভোগীরা ফায়দা লুটছে।

বাগেরহাটে ৯উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মওসুমে এ উপজেলায় ১৮৫২ একর জমিতে করল্লা, ২ হাজার ৪৯৪ একর জমিতে শসা, ঢেঁড়স ৯৪ একরে, চালকুমড়া ৯৬ একরে, মিষ্টিকুমড়া ৯৬ একরে, বেগুন ৯৬ একরে, বরবটি ২৭৩ একরে, চিচিঙ্গা ৩২৩ একরে ও ৬২ একর জমিতে পুঁইশাকসহ মোট তিন হাজার ২১১ একর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। বাগেরহাটেরএ ৯উপজেলায় ২৩৬৫৬২ জন কৃষক চাষি রয়েছেন। তবে বেসরকারি পরিসংখ্যানে এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি।

উপজেলার সুরশাইল, কুরমনি, পাটরপাড়া, খাশেরহাট, দড়িউমাজুড়ি, বাখেরগঞ্জ, খড়মখালী, শৈলদাহ, কালিগঞ্জ, হিজলা, নালুয়া, বড়বাড়িয়া ও ডুমুরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মৎস্য চাষের সাথে ঘেরের চারপাশের বেড়িতে (পাড়ে) চাষিরা সবজির চাষ করেছেন।

এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শসা, করল্লা, বরবটি, চালকুমড়া, লাউ ও ঝিঙেসহ বিভিন্ন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু মওসুমের শুরুতেই আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। কারণ ব্যাংকঋণ ও এনজিওসহ সুদখোর মহাজনদের চাপে অনেকেরই এখন নাভিঃশ্বাস অবস্থা।

এত কিছুর মধ্যেও আড়তদারদের সিন্ডিকেট ও ইজারাদারদের অধিক মাত্রায় খাজনা আদায়ের অভিযোগও তুলেছেন সবজি চাষিরা। চিতলমারীর বিভিন্ন আড়ত ঘুরে জানা গেছে, এখানে প্রতি মণ করল্লা ৬৫০-৭৫০, শসা ৩২০-৪৫০, বরবটি ৪০০, পুঁইশাক ৪০০, বেগুন ৯০০, কুশি ৬০০ ও ঝিঙে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে; যা আগের চেয়ে অনেক কম দাম। তাই হঠাৎ বাজার দর পড়ে যাওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এ ব্যাপারে পাইকারি সবজি ক্রেতা মন্টু মহাজন জানান, বর্তমানে এখানে দূর-দূরান্ত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক আসতে চায় না। তাই এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, এবার এ উপজেলায় সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারজাতকরণের ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।