সিংড়ায় একই প্রতিষ্ঠানে সুপার পদে দুজন

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের সিংড়া উপজেলা সদরে অবস্থিত আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয় সুপার পদে রয়েছেন দুজন। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানে রয়েছে দ্বিধা বিভক্তি। সুপার নজরুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত সুপার উম্মে সালমা খানম দ্বন্দে ও জর্জরিত অত্র প্রতিষ্ঠানটি নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বেড়াজালে বন্দি।

প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির সাথে ও রয়েছে দ্বন্দ। এতে করে প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক কার্যক্রম মুখ থুবরে পড়েছে। অপরদিকে প্রতিষ্ঠাতা একই স্থানে তার নিজ নামে মাহাবুবুর রহমান নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম সর্বস্ব সাইনবোর্ড খুলে ভূয়া নিয়োগের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এনিয়ে ও রয়েছে ক্ষোভ। এসব বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও দূর্নীতি দমন কমিশনের দৃষ্টি কামনা করেছে স্থানীয়রা।

জানা যায়, ১৯৯৯ সালে আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরে ২০০২ সালে এমপিও লাভ করে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ মাহাবুবুর রহমান বিদ্যালয়ের জায়গা বড় হরিপুর মৌজায় উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম শুরু করেন। প্রকৃত পক্ষে প্রতিষ্ঠানটি কাঁটাপুকুরিয়া মৌজায় অবস্থিত।

ঐ সময় প্রতিষ্ঠাতা মোঃ মাহাবুবুর রহমান লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ প্রদান করেন এবং নিজেও কর্মচারি পদে নিয়োগ গ্রহণ করেন। এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ন ভূয়া ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রনালয় তদন্ত কমিটির রিপোর্টে তা প্রকাশ হয়েছে।

স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠাতা ও কর্মচারী একই ব্যক্তি মোঃ মাহাবুবুর রহমান যিনি প্রতি মাসে ঘরে বসে বেতন ভাতা উত্তোলন করেন । মূল হাজিরা খাতায় নিজ বাড়িতে স্বাক্ষর করেন। সরকারী বিধি মোতাবেক প্রতিষ্ঠাতা কখনো কর্মচারী পদে সরকারী সুযোগ সুবিধা পেতে পারে না। শুধু প্রতিষ্ঠাতা নন, অত্র বিদ্যালয়ের কর্মরত ২৫জন শিক্ষক কর্মচারীর নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধ ও ভূয়া, তারা সরকারী কোষাগার থেকে ২০০২ইং সাল থেকে অবৈধ ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে সরকারি অর্থের অপচয় করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, ২০০৮ সালে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রনালয় কর্তৃক প্রতিষ্ঠানটি অডিট হয়। ঐ অডিটে সকল শিক্ষক কর্মচারী এবং প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ক্রটি বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হওয়ায় চাকুরির শুরু থেকে ৩১.০৯.২০০৮ইং পর্যন্ত তাদের সকল টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরৎ দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়।

ওই প্রতিবেদনে ০১.১০.২০০৮ইং তারিখ থেকে সরকারি বেতন ভাতা গ্রহন করলে তাও ফেরৎ যোগ্য হবে বলে জানানো হয়। অথচ এতো অনিয়ম করে প্রতিষ্ঠানটি কিভাবে পরিচালিত হয় তা নিয়ে এলাকাবাসির মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। সচেতন মহল অবিলম্বে অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল অনিয়ম দূর্নীতির সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে।

এদিকে অভিভাবকরা জানান, শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ আর প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা নিয়মিত উপস্থিত নয় এ কারনে সন্তানদের ওই স্কুলের পরিবর্তে অন্য স্কুলে ভর্তি করান। এতে করে বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ও কমছে। প্রতিষ্ঠাতা মোঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন, প্রতিটি কারিগরি প্রতিষ্ঠান কম বেশি দূর্নীতিগ্রস্থ। আমি প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সুযোগ বেশি পেয়েছি।

স্কুলে যাবার বিষয়ে বলেন, মাঝে মাঝে স্কুলে যাই। খোঁজখবর নিই। সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, হাইকোটের নির্দেশনার পরে ও আমাকে স্বপদে দায়িত্ব অর্পণ করতে দেয়া হচ্ছেনা। এ ব্যাপারে তিনি ম্যানেজিং কমিটির অবহেলাকে দায়ী করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুর রহমান বলেন, স্কুলের নানা অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি , আশা করি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধŸতন কর্তৃপক্ষ দেখবে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত ) বিপুল কুমার জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অডিট কমিটির রিপোর্ট এ যে অনিয়ম ধরা পড়েছে, কি কারণে তার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তাও খতিয়ে দেখা দরকার।