উলিপুরে জমে উঠেছে পশুর হাট

হাফিজ সেলিম, উলিপুর (কুড়িগ্রাম): ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি। জমে উঠেছে পশুর হাট। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বৃহৎ গরুর হাট স্টেডিয়াম মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জাতের গরু-ছাগলে ভরপুর। তিল ধারনের জায়গা নেই। নিজের পালিত গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বিক্রেতারা। আর ক্রেতারা পছন্দের গরু খুজছেন কম দামে কিনতে। কেনাবেচা কম হলেও ঘাটতি নেই ক্রেতা-বিক্রেতার। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের অভিযোগ হাট ইজারাদার গরু দাঁড়ানোর জায়গা ঠিক মতো তৈরী না করায় তাদের বিড়ম্বনার পড়তে হচ্ছে।

হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উলিপুর পুলিশ প্রশাসন গরু হাটে পুলিশী টহল জোরদার করেছেন। থানার অফিসার ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ঈদ উপলক্ষ্যে সব ধরনের অরাজকতা ঠেকাতে হাট বাজার গুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন স্থান ও নদী পথে পুলিশী টহল বাড়ানো হয়েছে।

গরু হাট সরগরম। সবাই ব্যস্ত পছন্দের পশু খুঁজতে। এরমধ্যে হঠাৎ করে দাঁড়ানো একটি ষাঁড় দৌঁড় দেয়। আর সাথে সাথে অন্য গরুও ছোটাছুটি শুরু করে। এসময় ক্রেতা-বিক্রেতারাও ছোটাছুটি করতে থাকেন। শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। এ ভাবেই চলছে ঈদ বাজারের উলিপুর হাটের গরু বেচাকেনা। এসময় কথা হয় উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের রব্বানী নামের এক ক্রেতার সাথে। তিনি জানান, হাটে গরু দাম একটু বেশি।

তবে হাটে আসা গরু বিক্রেতা মাজেদুল ইসলাম বলেন অন্য কথা। তিনি বলেন, একটা গরু পালন করতে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে, সে টাকাই উঠছে না। এ রকম চলতে থাকলে আগামীতে এ এলাকার মানুষ গরু পালন করা ছেড়ে দিবেন। গত বৃহস্পতিবার উলিপুর গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয়ভাবে পালন করা খামারী সহ ব্যক্তি পর্যায়ে পালন করা বিভিন্ন আকারের গরু হাটে উঠেছে। এছাড়া ছাগলের পাশাপাশি ভেড়াও কেনাবেচা করতে দেখা গেছে। একেকটা গরু ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাকাচ্ছেন বিক্রেতারা।

তবে হাটে আসা ক্রেতারা তাদের সামর্থ্যরে মধ্যে গরু কেনার চেষ্টা করছেন। এ হাটে চাহিদা মত গরু পাওয়া যায় বলে ক্রেতাদের ভিড় থাকে বেশি। সবার লক্ষ্য থাকে উলিপুর হাটেই গরু কিনবে। ছোট আকারের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় ব্যক্তি পর্যায়ে পালন করা গরুর সমাগম ঘটে বেশি। কিন্তু ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি থাকলেও কাঙ্খিত মূল্য না পাওয়ায় গরু বেচাকেনা হচ্ছে কম।

তবে অনেক বিক্রেতার আশা শেষ মহুর্তের হাট গুলোতে তারা কাঙ্খিত দাম পাবেন। উলিপুর উপজেলার থেতরাই হাট, মন্ডলেরহাট, দূর্গাপুর হাটসহ ছোটবড় এসব হাটে শেষ মহুর্তে বেচাকেনা জমে উঠেছে। এদিকে, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড গরু হাটে মানি ডিটেক্টর মেশিন জাল নোট সনাক্ত করতে কাজ করছেন।

সোনালী ব্যাংক লিমিটেড উলিপুর শাখার এসপিও ম্যানেজার নিরঞ্জন চন্দ্র রায় বলেন, গরুরহাটে যাতে কেউ প্রতারিত না হয় সেজন্য আমরা সকাল থেকে হাটের শেষ পর্যন্ত কাজ করছি। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ প্রধান জানান, হাটে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ নিষিদ্ধ কোন ঔষধ ব্যবহার করে মোটাতাজা করণ করা গরু যাতে বিক্রি করতে না পারে সেজন্য আমাদের মেডিকেল টীম সার্বক্ষনিক কাজ করে যাচ্ছে।