বিয়ের তিন মাস যেতে না যেতেই স্বামীর গৃহে স্ত্রীর লাশ

মিজানুর রহমান সোহেল, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: বিয়ের তিন মাস যেতে না যেতেই স্বামীর গৃহে লাশ হলো গার্মেন্টস কর্মী রুমি। নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের হীরাগঞ্জ বাজারে সুবাহান ম্যানশনের দুতলার নিচ তলার একটি কক্ষ থেকে জেআইসি স্যুট গার্মেন্টস কর্মী রুমি আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক ওরনা দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ।

এ মৃত্যু নিয়ে জনতার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ আলোচনা সর্বত্র। জনতার দাবীর প্রেক্ষিতে পুলিশ গার্মেন্টস কর্মী স্বামী নূর আলম(৩৫) কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। সকাল ১০ টায় নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে । নিহত রুমি উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের জালালসাফ গ্রামের দিন মজুর আশ্বদ মিয়ার কন্যা ।

আটককৃত নূর-আলম (৩৫) আউশকান্দি জেআইসি স্যুট গার্মেন্টসের লাইন চীপ পদে কর্মরত। সে নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ছিলিমপুর গ্রামের হেলাল উদ্দিন মিয়ার পুত্র। নূর-আলম গার্মেন্টসে চাকরীর সুবাধে ১ম স্ত্রী-পুত্র থাকা সত্ত্বেও গার্মেন্টস কর্মী রুমির সঙ্গে পরকীয়া প্রেম গড়ে তোলে। পরে রুমিকে ফুসলিয়ে ১ম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই ২য় বিয়ে করে।

গতকাল শনিবার সকাল অনুমান ৬টার দিকে নূর-আলমের সাথে পারিবারিক কলহের জের ধরে রুমি এবং নূর-আলমের ১ম স্ত্রী রিনা বেগমের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি ও। সকাল সাড়ে ১০ টায় খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ এসে সুবাহান ম্যানশনের একটি রুম থেকে দরজা ভেঙ্গে রুমি বেগমের নিথর দেহ জানালার গ্রিলের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। ঐ ভাড়টিয়া বাড়িতে নারী পিপাসু নূর-আলম দুই স্ত্রী ও দুই শালীকে নিয়ে বসবাস করে আসছিল।

নিহত রুমির মা ছফিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর থেকে স্বামী নূর আলম ও তার ১ম স্ত্রী রিনা বেগম মানুষিক ও শারীরিক অত্যাচার করে আসছিল, প্রায় সময় আমি এসে মিমাংশা করেআমার মেয়েকে শান্তনা দিয়ে যেতাম , এরপর ও আমার মেয়ের ওপর চলতো অমানুষিক নির্যাতন, আমার ৪ মেয়ের মধ্যে রুমি সবার বড়, আমার স্বামী ব্রিকফিল্ডে শ্রমিকের কাজ করেন, আমরা অসহায় পরিবারের লোকজন এই ঘটনা সুষ্ঠ তদন্তের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।

হীরাগঞ্জ বাজারে পাশ্ববর্তী বাসিন্দা ফকির ফজলু মিয়া জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা এখবর জানতে পারি, এটি হত্যা না আত্মহত্যা আমরা কিছুই বলতে পারবো না, তবে নূর আলম একজন নারী লোভী আশা করি পুলিশের তদন্তে সব বেড়িয়ে আসবে ।

এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুন বলেন, উক্ত ঘটনার সঠিক তদন্ত করে রহস্য উৎঘাটনের জন্য পুলিশের প্রতি দাবী করছি। নবীগঞ্জ থানার ওসি (অপারেশন) নুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমরা এসে লাশ উদ্ধার করেছি, ময়না তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।