শার্শার নীলকুঠির ফ্যামিলি পার্কে অবাধে চলছে দেহ ব্যবসা, প্রশাসন নীরব

বেনাপোল প্রতিনিধি: যশোরের শার্শার উলাশি অবস্থিত নীলকুঠির ফ্যামিলি পার্কে অবাধে চলছে দেহ ব্যবসা। প্রকাশ্যে দিবালোকে এ দেহ ব্যবসা চললেও কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করায় পার্কটি মিনি পতিতালয় হিসাবে গড়ে উঠেছে। মাঝে মধ্যে এ পার্কে স্কুল ও কলেজ পড়–য়া ছেলে মেয়েদেরও দেখা যায়। পার্কের মালিক ও তার কর্মচারীরা দেহ ব্যবসা করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ ও কোমলমতি ছেলে মেয়েরা।

উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবক মহল। জনমনে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। দাবী উঠেছে অবিলম্বে পার্কটি বন্ধ করা হোক। স্থানীয় এলাকাবাসির অভিযোগ প্রতিদিন যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, কলারোয়া, ঝিকরগাছা, নাভারন, বেনাপোল, শার্শাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা যৌন কর্মীদের নিয়ে শার্শার উলাশী এলাকার তরিকুল ইসলাম মিলন নীলকুঠির ফ্যামিলি পার্কের নামে গড়ে তুলেছে মিনি পতিতালয়। দীর্ঘদিন চলছে এ ব্যবসা। এলাকার উঠতি বয়সের স্কুল, কলেজ গামী ছেলে মেয়েরাও ঝুকে পড়েছে এ দেহ ব্যবসায়।

স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে পার্কের আড়ালে এ অবৈধ কারবার। সরেজমিনে নীলকুঠি পার্কের গেটে বসে থাকা স্থানীয় বজলুর রহমান বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা দেহ ব্যবসায়ীরা উলাশী বাজার বাস থেকে নেমে অনেকে বোরখা পরে এখানে আসে। এক দুই ঘন্টা পরে এরা কাজ সেরে আবার চলে যায় । এখানে পার্কের ভিতরে ছোট ছোট করে ঘর করা আছে। আবার দোকানের ভিতর ছোট ছোট রুম করা আছে দেখে বুঝার কোন উপায় নাই।

সেখানে খরিদ্দার নিয়ে এরা প্রবেশ করে তারপর কাজ শেষে এরা চলে যায় গন্তব্যস্থলে । নাম প্রকাশ না করার শর্তে পার্কের এক কর্মচারী বলেন যারা মেয়ে নিয়ে আসে তাদের নিকট থেকে ঘর ভাড়া ঘন্টায় ১ হাজার টাকা। আর যারা আমাদের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী মেয়ে নেয় তাদের নিকট থেকে দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। অনুসন্ধানে জানা যায় পার্কের ভিতর অনেক স্কুল কলেজ পড়ুয়া মেয়ে ও ছেলেরা ঘরের আসায় লাইন দিয়ে বসে থাকে রুম খালি হওয়ার অপেক্ষায়।

পার্কের জনৈক কর্মচারী বলেন এখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে কোন সমস্যা নেই । দেখেন না মেয়ে ছেলেরা লাইন দিয়ে বসে আছে তাদের ঘর দিতে পারছি না। সারাদিন এ পার্কের ভিতর সকাল থেকে রাত অবধি চলে দেহ ব্যবসা। পার্কের মালিক তরিকুল ইসলাম মিলনকে সন্ধান করেও তাকে পাওয়া যায়নি । কর্মচারীরা বলেন মিলন ভাইকে কি প্রয়োজন। সকল ধারনের ব্যবস্থা করে থাকি। যখন সাংবাদিক পরিচয় জানতে পারে তখন তারা বলে আপনারা বসেন আমরা মিলন ভাইকে ডেকে আনছি।

আর বোঝেনতো পার্ক হচ্ছে বিনোদনের জায়গা। পার্কে এদিক সেদিক কাজ না হলে পার্ক চলবে কি করে। স্থানীয় সচেতন এলাকাবাসী বলেন শার্শার উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েরা শুধু মাত্র পার্কের খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসির দাবী উঠেছে অবিলম্বে পার্কটি বন্ধ করা হোক। এ ব্যাপারে পার্কের মালিক তরিকুল ইসলাম মিলন বলেন পার্কে কোন অবৈধ কোন কাজ হয় না। অভ্যন্তরিন কোন্দলে বেনাপোল পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক আশরাফুল আলম লিটন পার্কটি ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ও বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বেনাপোলের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আরও উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড চলমান রয়েছে। ছোট খাটো কোন কিছু ভাবার কোন সুযোগ নেই। শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম মশিউর রহমান বলেন পার্কের মূল ফটক ছাড়া বাকী অংশ ঝিকরগাছা থানার মধ্যে পড়ে।

যার কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি নিয়ে উদ্ধর্তন কর্ত্তপক্ষের সাথে আলোচনা করে তাদের দিক নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই এনামুল হক বলেন পার্কটি শার্শা থানার মধ্যে হলেও দুই থানার মধ্যে আলোচনা করে অবিলম্বে অভিযান চালানো হবে। ইতোমধ্যে খোজ খবর নেয়ার জন্য শিওরদাহ পুলিশ ফাড়িকে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।