৩ মেয়াদেও শেষ হয়নি জবি ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ

ইসমাইল হোসাইন, জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহুল প্রতীক্ষিত প্রথম এবং একমাত্র ছাত্রী হলের নির্মান কাজ এ বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন। এর আগে এই হলের কাজের প্রকল্পের মেয়াদ তিন বার বৃদ্ধি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ জন্য দায়ী করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদাসীনতাকে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য হল প্রাণের দাবি। বিভিন্ন সময়ের আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র আবাসিক হল ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ ছাত্রী হলের প্রকল্পের প্রথম মেয়াদের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত। দ্বিতীয় মেয়াদ ২০১৩ জুন থেকে ২০১৬ জুন এবং সর্বশেষ ২০১৬ জুন থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত তৃতীয়বারের মতো মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।

এখন ১৮ সালের জুন পেরিয়ে গেলেও নিদিষ্ট সময়ে হল বিশ্ববিদ্যালয়কে বুঝিয়ে দিতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের যেকোনো কাজের মেয়াদ দুই বারের বেশি বাড়ানো হয় না। কিন্তু বিশেষ বিবেচনায় তিনবার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ হলটির। শেষ মেয়াদে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা চলতি বছরের জুনের ৩০তারিখে। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবার ও সময় মত কাজ শেষ করতে পারেনি। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বহীনতাকে।

আর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে স্থানীয় সমস্যার কথা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ঢিলেঢালাভাবে চলছে হলটির নির্মাণকাজ। ১৫ তলা পর্যন্ত ছাদ ঢালাই দিলেও এখনো অনেক কাজ বাকি। নির্মাণাধীন ভবনটি ১৬ তলা হওয়ার কথা রয়েছে। এতে ১১১টি কক্ষ, একটি লাইব্রেরি, একটি ক্যান্টিন, একটি ডাইনিং, প্রতি তলায় সাতটি করে টয়লেট, আটটি গোসলখানা, ছাত্রীদের ওঠা নামার জন্য চারটা লিফট করা হবে। এগুলোর আংশিক কাজ হলেও বেশির ভাগ কাজই এখনো করা হয়নি। দরজা, জানালা, পানির পাইপ কিছুই লাগানো হয়নি।

এছাড়া লিফট, গ্যাস লাইন ও পানির জন্য দরপত্র ও করা হয়নি। কাজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে পুরোপুরি হল বুঝিয়ে দিতে আরো ১০ থেকে ১২ মাস লাগবে বলে জানান নির্মানাধীন এক শ্রমিক। প্রকল্পের কাজ দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হল নির্মাণে দায়িত্বরত প্রকল্প ব্যবস্থাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন,প্রকল্পটি ২০১১ সালে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ২০১৪ সালে আমাদের হাতে বুঝিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এই জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ভবনের কাজ করার জন্য আশপাশে যে পরিমাণ জায়গার প্রয়োজন সেই পরিমাণ পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাই একপাশ থেকেই কাজ চালাতে হয়েছে। একসাথে মালামাল রাখতে না পারা এবং বিভিন্ন সময়ের প্রাকৃতিক দূর্যোগকে তিনি দায়ী করেন। তিনি আশা করেন ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এর কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রকৌশলী মো: ওহিদুজ্জামান বলেন, হল বিষয়ে আমাদের কোন এখতিয়ার নেই এই বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীই ভালো বলতে পারেন। আমরা বিভিন্ন সময় তাদের চাপ প্রয়োগ করেছি কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য। তবে আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে।