কর্ণফুলীতে আদালতের নির্দেশ মানতে ওসির গড়িমসি

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিরোধীয় জমিতে দুপক্ষের মধ্যে স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্ণফুলী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট। কিন্তু অভিযোগ ওঠেছে ওসি আদালতের নির্দেশ মানতে নানা গড়িমসি শুরু করে। ৬দিন গত হলেও পুরাদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা।

জানা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাদী মনোয়ারা বেগমের আবেদনে বিজ্ঞ আদালত ১৪৫ ধারা মতে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রসিডিং ড্র ও ৫১২ নং মিছ মামলা সুত্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তপশিলোক্ত ভূমিতে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা ও স্থিতি অবস্থা বজায় রাখতে আদালত আদেশ জারি করেন। কিন্তু প্রভাবশালীরা কিছুতেই কর্ণপাত না করে প্রতিপক্ষের গাছপালা কেটে ভিটেবাড়ি জমি জবর দখল চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের খোয়াজনগর গ্রামের লাল মিয়া কন্ট্রাক্টারের বাড়িতে। এনিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। কেননা একই জমিজামার বিরোধে এর পুর্বেও দুইপক্ষের মধ্যে খুনাখুনির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। ফলে যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মতো ঘটনা।

এদিকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন আদেশ পাওয়ার ৬দিন পর কর্ণফুলী থানার সহকারি উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) মোঃ জোবায়ের হোসেন স্ব স্ব অবস্থানে থাকতে ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দুপক্ষকে নোটিশ জারি করে। কিন্তু দেখা যায় প্রভাবশালীরা তাও মানছেন না। বরং নোটিশ উপেক্ষা করে ভূমিতে কাজ করে যাচ্ছে।

আদালতের নির্দেশ ও পুলিশের নোটিশ পেয়ে বরং প্রতিপক্ষরা আরো বেপরোয়া ও নানা হুমকি দমকি দিচ্ছে বলে বাদি মনোয়ারা বেগম অভিযোগ করেন। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় পুলিশ আদালতের আদেশ পাওয়ার পরও কাজ বন্ধ করতে গড়িমসি শুরু করছে। ফলে আমাদের ভিটেবাড়ি বেদখল হয়ে যাচ্ছে।জানা যায়, প্রভাবশালীরা জমিটি দখলে নিতে অসহায় পরিবারটির ভিটেবাড়িতে থাকা ৫২টি (ফুল গাছ, সুপারি গাছ, বাদাম গাছ ও নারকেল) গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলেছে।

ঘটনা সুত্র জানা যায়, ১নং (খ) চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের নুরুচ্ছাফা গং, আবু বক্কর, মোঃ আজাদ, আব্দু শুক্কুর, ও রুবেল নামে প্রভাবশালীদের একটি সংঘবদ্ধ দল, তাদের লোকজন নিয়ে একই ইউনিয়নের হোসনে আরা বেগমের দাদা শ্বশুর কতৃক দানপত্রে পাওয়া জমি ভোগ দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছে।

যদিও বিরোধীয় ভূমি বিষয়ে পটিয়া জজ আদালতে মামলা প্রক্রিয়াধীন থাকা সত্বেও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তা অমান্য করে জোরপুর্বক উচ্ছেদ করে স্থাপনা ও ঘরবাড়ি নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে বাধা দিতে গিয়ে জমির মালিককে প্রাণনাশের হুমকি ও মারধর করার চেষ্টা করে এবং বিভিন্ন ধরণের মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেন আরেক ভুক্তভোগীরা আব্দুল মজিদ মিন্টু।

পরিবারটি অভিযোগ করে জানান, প্রভাবশালীরা রাতারাতি ভিটেবাড়ি দখল করতে নির্মাণ সামগ্রী ইট,কংক্রিট, সিমেন্ট ও রড মজুদ করে রাখে। এমনকি দিবালাকে প্রকাশ্যে জবর দখল করে লোকজন দিয়ে জায়গাটি আয়ত্বে নিতে পায়তারা করছে। পরে থানায় অভিযোগ দিলেও কোন উপায়ন্তর না পেয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর পরিবারটি আদালতের শরনাপন্ন হয়ে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে বলে জানান। কিন্তু যথা সময়ে আদালতের আদেশ ওসির কাছে পৌঁছালেও আদালতের নির্দেশ মানতে স্থানীয় পুলিশ নানা গড়িমসি করে সময় ক্ষেপন করে বলে বাদি পক্ষের অভিযোগ রয়েছে।

প্রতিপক্ষের কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কর্ণফুলী থানার ওসি মোঃ আলমগীর মাহমুদ জানান, বিরোধীয় জমিতে দুপক্ষের মধ্যে স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে নোটিশ দেওয়া হবে, কেহ তা মেনে কাজ করলে আদালতে যেতে পারে। এ বিষয়ে অসহায় পরিবারটি স্থানীয় সংসদ সদস্য ভূমিপ্রতিমন্ত্রী ও উর্ধ্বতন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন যেন মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু রক্ষা পায়। বর্তমানে পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানা যায়।