গৌতম হত্যা মামলায় ৪ আসামিকে ফাঁসিতে

সাতক্ষীরার চাঞ্ল্যচকর কলেজ ছাত্র গৌতম সরকার হত্যা মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। আদালত এ মামলায় অপর ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। আজ বুধবার সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার এক জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষনা করেন।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হল, সাজা প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভাড়–খালী গ্রামের রুপচান গাজীর ছেলে নাজমুল গাজী (২৫), একই গ্রামের করিম হোসেনের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (৩০), দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে আলী আহম্মেদ শাওন ১৯) ও সদর উপজেলার মহাদেবনগর গ্রামের রেজাউল হোসেনের ছেলে সাজু হোসেন (২০)। তবে, জামিনে মুক্তি পাবার পর দন্ডিত আসামি আলী আহম্মেদ শাওন ও সাজু হোসেন পলাতক রয়েছে।

মামলার বিবরনে জানা গেছে, দশ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের মহাদেবনগর গ্রামের ইউপি সদস্য গনেশ সরকারের ছেলে সীমান্ত ডিগ্রী কলেজের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র গৌতম সরকারকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায় আসামিরা। এ সময় মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তার গালে গুলের তামাক ঢুকিয়ে মুখে টেপ এঁটে শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে হাতে পায়ে ইট ঝুলিয়ে বস্তার মধ্যে রেখে গৌতমের লাশ ফেলে দেওয়া হয় স্থানীয় মোকলেছুর রহমানের পুকুরে।

এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আসামি আলি আহমেদ শাওন ও শাহাদাত হোসেনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ১৭ ডিসেম্বর তার গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা গনেশ সরকার ১০ আসামির নাম উল্লেখ করে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল আলম দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল আদালতে ১০ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার নথি ও ১৬ জন স্বাক্ষীর জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে বিচারক আজ বুধবার এ মামলায় উক্ত চার আসামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ্বন্ড কার্যকর করার আদেশ প্রদান করেন এবং অপর ৬ আসামীর নামে কোন অভিযোগ না থাকায় তাদের খালাস প্রদান করেন।
এ মামলায় আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. এ.এস.এম আশরাফুল আলম, মিজানুর রহমান পিন্টু, ও অ্যাড. আক্তারুজ্জামান। অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি এড. ওসমান গনি ও অতিরিক্ত পিপি তপন কুমার দাস।।