সাহিদুর রহমান, জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের ইসলামপুরে যমুনার পানি কমলেও ডানতীরে ব্যাপক ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। প্রায় এক ১ মাস যাবত ভাঙ্গনে উপজেলার চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, সাপধরী ও বেলগাছা ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৭’শ ঘর-বাড়ি নদীতে ইতিমধ্যে বিলীন হয়েছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১৫শ পরিবারের ঘরবাড়ি। এ খবরটি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি’র চেয়ারম্যানগন। বৃহস্পতিবার দুপুর পযর্ন্ত বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৪সেন্টিমিটার পানি কমে এখনো বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে বাপাউ বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, বিগত এক মাস থেকে উপজেলার নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে চিনাডুলীর চরন্দন পাড়া গ্রামের ৫০টি, নোয়ারপাড়া কাটমা, কাজলা, মাইজবাড়ি, সোনামুখি গ্রামের ১৫০টি, সাপধরী কাশারীডোবা, চেঙ্গানিয়া, আকন্দপাড়া গ্রামের ২৫০টি, ও সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়া, বরুল, শীলদহ গ্রামের সাড়ে ৩০০টি ঘর বাড়ি বিলীন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদীভাঙনে ভিটামাটি হারিয়ে সাপধরী ইউনিয়নের উত্তর কাশারীডোবা, চেঙ্গানিয়া, আকন্দপাড়া গ্রামের আড়াই শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অসহায় পরিবারগুলো গৃহপালিত প্রাণী, বৃদ্ধ ও শিশুসহ দক্ষিন কাশারীডোবার উচুস্থানে খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়ে চরম কষ্টের মধ্যে রয়েছে। সেখানে পানি, খাদ্য সংকট সহ যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় তারা চরম দূর্ভোগে পড়েছে।
ওই এলাকার নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত ওহেদ, নুরুল ইসলাম, রজব আলী, কোহিনুর, নাজমা বেগম জানান, সর্বনাশা যমুনা নদী আমাদের সব নিয়েছে। আংগর (আমাদের) আর অবশিষ্ঠ কিছুই নাই। আমরা বউ পোলা পান নিয়্যা (নিয়া) কিবায় চলব, কোঠায় (কোথায়) যাইমু। আমোরা এখন দিশা হারা। আংগরে অহন পযর্ন্ত কেউ কোন কিছু (ত্রাণ) দেয় নাই। আরো অনেকেই একই কথা বলেন।
সাপধরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় ১৫ দিন থেকে আড়াই শতাধিক ঘর বাড়ি নদীতে চলে গেছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৪’শ পরিবারের। তারা এখন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছে। বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানান, সবচেয়ে আমার ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের সাড়ে ৩ শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে।তারা এখন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি ওইসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখায় দাখিল করেছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জানান, চেয়ারম্যান লিখিভভাবে নদীভাঙ্গণের সংবাদ জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা যাচাই বাচাই করা হচ্ছে। বাছাইয়ে যাদের নাম টিকবে তাদেরকে ঢেউটিনসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।