কক্সবাজারে মাদক বিরোধী টাস্কফোর্স এ বিশেষ অভিযান দেশীয় অস্ত্রসহ ২৯ লাখ টাকা জব্দ, ৭টি মামলা

জে.জাহেদ, চট্টগাম ব্যুরো: কক্সবাজারে মাদক বিরোধী টাস্কফোর্সের দুই দিনের অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ ২৯ লাখ টাকা জব্দ, সাতটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কক্সবাজার ও টেকনাফে ইয়াবা পাচার রোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে গঠিত টাস্কফোর্স এ বিশেষ অভিযান চালায়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস ও গোয়েন্দা) ও টাস্কফোর্সের সভাপতি ড. এএফএম মাসুম রব্বানীর নেতৃত্বে কক্সবাজার, রামু ও টেকনাফে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়িতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

৯ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, ব্যাটালিয়ন আনসার ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের সমন্বয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদকব্যবসায়ী টেকনাফের নাজিরপাড়ার জিয়াউর রহমান জিয়া, এনামুল হক, টেকনাফ পৌরসভার পুরান পল্লান পাড়ার শাহআলাম, নাইট্যং পাড়ার শাহ আলম কাউন্সিলর, নারী কাউন্সিলর কোহিনুরের বাড়িতে মাদক বিরোধী যৌথ টাস্ক ফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

এছাড়াও দক্ষিণ জালিয়া পাড়ার জুুুুবাইর, আব্বাসের ছেলে নেজাম, রেজাউল করিম রেজা, মোহাম্মদ মোজাম্মেল, শুক্কুর আহমদ, সাবরাং নয়াপাড়ার শামসুল আলম মার্কিন, হ্নীলার ইউপি সদস্য মো. নুরুল হুদা, জামাল হোসেন, শামসুল আলম বাবুল,হাসান আবদুল্লাহর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়া একই দিনে কক্সবাজার সদরের লারপাড়ার লাল মোহাম্মদের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে দেশী ১৬টি অস্ত্রসহ ইয়াবা বিক্রির ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫৭ টাকা জব্দ করা হয়।

অভিযানকালে ইয়াবা পাওয়া যাওয়ায় লারপাড়ার প্রতিষ্ঠিত ইয়াবা ব্যবসায়ী লাল মোহাম্মদের স্ত্রী সায়েরা খাতুনকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৬ মাসের সাজা প্রদান করেন। টেকনাফের শাহ পরীরদ্বীপের আনিসুর রহমান ইয়াহিয়া ও রেজাউল করিম রেজু মেম্বারের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। রেজু মেম্বারের বাড়ি হতে ২৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় রেজু মেম্বারের ভাই ফরিদ আহমেদকে আটক করা হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ সার্কেল পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) উক্ত ঘটনায় বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ এর সংশ্লিষ্ট ধারা মোতাবেক আটক ফরিদ আহমেদকে মূল আসামি এবং রেজু মেম্বার ও তার অপর ভাই আব্দুল মাজেদকে পলাতক দেখিয়ে টেকনাফ থানায় একটি মামলা করেন।

অপরদিকে একই দিনে কক্সবাজার সদর উপজেলার লারপাড়ার আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী দুই ভাই রশিদ আনসারী ও আবু সুফিয়ান আনসারীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এছাড়া, রামুর জোয়ারিয়ানালার চেয়ারম্যান এম এম নুরুচ ছাফার বাড়িতেও অভিযান চালায় টাস্কফোর্সের সদস্যরা।
কক্সবাজার জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সোমেন মন্ডল জানান, দুই দিনের টাস্কফোর্সের অভিযানে মোট ৭ টি মামলা দায়ের করা হয়, জব্দ করা হয় মাদকবিক্রয় হতে প্রাপ্ত ২৯ লাখ ১০ হাজার ৭৫৭ টাকা, ১০০৫ পিস ইয়াবা, রামদা ৪টি, কিরিচ ২টি, ছোরা ১০ টি ও দামা ২টি।

উক্ত অভিযানে অংশগ্রহণ করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী, বিভাগীয় গোয়ান্দা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক একেএম শওকত হোসেন, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সোমেন মন্ডল, কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রণজিত কুমার বড়ুয়া সহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা।